মার্কিন পার্লামেন্টে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ৪
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট বা ক্যাপিটল ভবনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকদের হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত চার জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন সাবেক সেনা সদস্য।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমেই পুলিশের গুলিতে এক নারী নিহত হন। পরে ‘মেডিকেল ইমার্জেন্সি’ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আহত আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।
ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র মিজ বাউজার বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টার পর ক্যপিটল হিলের বিক্ষোভ সম্পর্কে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
তিনি জানান, হাউজ রুমে অধিবেশন চলাকালে কয়েজন জোরপূর্বক প্রবেশ করে। ওই দলটির সদস্য ছিলেন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া নারী। ওই দলটিকে সাদা পোশাকের কয়েকজন কর্মকর্তা বাধা দেন এবং অফিসারদের একজনের গুলিতে ওই নারী মারা যান।
মিজ বাউজার জানান, নিহত হওয়া বাকি তিনজনের একজন নারী ও দুই জন পুরুষ।
এছাড়া মেট্রো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের অন্তত ১৪ জন সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৫২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে; যাদের মধ্যে ৪৭ জনকে কারফিউ ভাঙ্গার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের বিজয় অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতারা বুধবার কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে বসেন। উভয় কক্ষের এই অধিবেশনে পপুলার ভোটের ভিত্তিতে ইলেকটোরাল কলেজের দেয়া ভোটগুলো গোনা হয় এবং তা চূড়ান্তভাবে প্রত্যয়ন করা হয়। অধিবেশনের কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই এর বিরোধিতা করে ওয়াশিংটনে জড়ো হতে থাকেন কয়েক হাজার ট্রাম্প সমর্থক। সমাবেশে বক্তব্য দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এতে তিনি নভেম্বরের নির্বাচনে পরাজয় মেনে না নেওয়ার ঘোষণা দেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই সমাবেশের অল্প একটু দূরেই ক্যাপিটল ভবন। ট্রাম্পের কয়েকশ উগ্র সমর্থক সেখানে গিয়ে ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। কংগ্রেসের অধিবেশন চলাকালেই পুলিশের বাধা ভেঙে ভবনে ঢুকে পড়েন তারা। ভবনে ভাঙচুরও চালান। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদুনে গ্যাস ও পেপার স্প্রে ব্যবহার করে পুলিশ। গোলাগুলি এবং প্রাণহানীর ঘটনাও ঘটে।
ট্রাম্প সমর্থকদের আগ্রাসী তাণ্ডবের মুখে ক্যাপিটল ভবন অবরুদ্ধ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। ওয়াশিংটনে জারি করা হয় কারফিউ।
সংঘর্ষের মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদের (হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) সদস্যদের পাহারা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে পুলিশ। এই পরিস্থিতিতে সিনেট অধিবেশনও মুলতবি করা হয়।
পরে ক্যাপিটল ভবন থেকে ট্রাম্প সমর্থকদের হটাতে তিনঘণ্টা সময় লাগে পুলিশের। শেষ পর্যন্ত বুধবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ক্যাপিটল ভবনকে নিরাপদ ঘোষণা করে পুলিশ। পরে আইনপ্রণেতারা ফের অধিবেশনকক্ষে ফিরে আসেন। আবার শুরু হয় যৌথ অধিবেশন।
উল্লেখ্য, কংগ্রেসে স্বীকৃতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে ৭০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন। আর ইলেকটোরাল ভোটের হিসাবেও অনেক পিছিয়ে ট্রাম্প। তার ২৩২টির বিপরীতে বাইডেনের পক্ষে আসে ৩০৬টি। কিন্তু শুরু থেকেই ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তবে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় দলের নির্বাচন কর্মকর্তা ও নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে বড় ধরনের জালিয়াতির অভিযোগকে ভ্রান্ত আখ্যা দিয়েছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন