মিছিল দেখতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ রকিবুলের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় মিছিল দেখতে বাহিরে বের হয়ে গুলিতে আহত রকিবুল সরদার (৩০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার ভোর ৬টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

নিহত রকিবুল সরদার মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আলীনগর এলাকার দক্ষিন কানাইপুর গ্রামের কালু সরদারের ছেলে।

নিহতের পরিবার ও এলাকা সূত্রে জানা যায়, রকিবুলের পরিবারে স্ত্রী, ২ মেয়ে, বাবা, ৩ ভাই ও ১ বোন রয়েছে। তিনি ভাই-বোনের মধ্যে রকিবুল সরদার মেঝ। তিনি ঢাকার উত্তর বাড্ডায় একটি ফার্নিচারের দোকানে কাজ করতেন। দরিদ্র পরিবারের একমাত্র ভরসা ছিলেন তিনি। তার উপার্জনের ওপর নির্ভরশীল ছিলো পুরো পরিবার।

গত ২০ জুলাই বিকেলে উত্তর বাড্ডা এলাকায় ছাত্র-জনতার একটি মিছিল বের হলে আ.লীগের সঙ্গে ছাত্র-জনতার ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ মিছিল দেখতে বাসা থেকে রকিবুল সরদার রাস্তায় বের হয়। এ সময় দুই পক্ষের মিছিলের মাঝখানে পড়ে যান তিনি। তখন হঠাৎ পুলিশের একটি ছোড়াগুলি রকিবুলের পেটের সামনে দিয়ে ঢুকে পিছন দিয়ে বের হয়ে যায়। মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।

পরে স্থানীয় লোকজন তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। আজ মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী শাবনুর বেগম বলেন, আমার স্বামীর ওপর নির্ভরশীল ছিলো আমাদের সংসার। এখন আমাদের সংসার কে চালাবে। আমাদের সব শেষ হয়ে গেলো। একটি গুলিতে সব স্বপ্ন আজ মিথ্যা হয়ে গেলো। এখন আমরা কিভাবে বাঁচবো।

নিহতের মামা এইচ এম মশিউর রহমান জানান, রকিবুল ঢাকায় সোফা কাপড় সেলাইয়ের কাজ করে তার সংসার চালাতো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় দুই গ্রুপের ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার মধ্যে থেকে একটি গুলি এসে লেগে রকিবুলকে শেষ করে দিলো। তার সংসারে বাতি আজ নিভে গেলো।

এ বিষয়ে আলীনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান মিলন বলেন, রকিবুল মারা গেল, তার পরিবারের এখন কী হবে। আসলে বিষয়টি দুঃখজনক।