মিঠাপুকুরের পদাগঞ্জে আম মেলায় অবাধে চলছে জুয়া, অশ্লীল নৃত্য ও র্যাফেল ড্র
মো: শামীম আখতার, উপজেলা প্রতিনিধি, মিঠাপুকুর (রংপুর) : মিঠাপুকুরের পদাগঞ্জে হাঁড়িভাঙ্গা আম মেলায় চলছে জুয়া, অশ্লীল নৃত্য ও র্যাফেল ড্র। ১৫ দিন ধরে এসব কর্মকান্ড চললেও কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি প্রশাসন। এরফলে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় জন সাধারণের মাঝে।
সরেজমিনে মেলায় খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতি বছরের মত এবারেও হাঁড়িভাঙ্গা আমকে কেন্দ্র করে পদাগঞ্জ বাজারে বসেছে হাড়িভাঙ্গা আম মেলা। সেখানে নানা ধরণের স্টল সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ধুমছে বেচা-কেনা চলছে হাঁড়িভাঙ্গা আম। আয়োজক কমিটি শুধুমাত্র হাঁড়িভাঙ্গা আম মেলার আনুমোদন নিলেও এসবের মাঝে মুল আকর্ষণ র্যাফেল ড্র, জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য। ২০ টাকা মুল্যের টিকেটে প্রতিদিন ড্র হচ্ছে লটারির। দেওয়া হচ্ছে একটি মোটর সাইকেলসহ লোভনীয় নানা পুরস্কার। প্রায় ৫০টি ভ্যানগাড়ি, পিকআপ ও আটো ভ্যানে করে গ্রামে গ্রামে গিয়ে র্যাফেল ড্র’য়ের টিকেট বিক্রয় করছেন নিয়োগকৃত প্রতিনিধিরা। এরফলে, অনেকে মোটর সাইকেলের লোভে হাজার হাজার টাকার টিকিট ক্রয় করে নিঃস্ব হচ্ছেন।
এমনি একজন রুপসী গ্রামের দিনমজুর আজমল মিয়া। তিনি বলেন, আমার পক্ষে মোটর সাইকেল ক্রয় করা সম্ভব নয়। তাই, প্রতিদিন ২শ টাকা দিয়ে ১০টি টিকেট কেটেছি। কিন্তু, এ পর্যন্ত একটি পুরস্কারও পাইনি। আজমল মিয়ার মত মিঠাপুকুরের খোড়াগাছ, ময়েনপুর, রাণীপুকুর, চেংমারী, লতিবপুর ও দূর্গাপুর ইউনিয়ন এবং বদরগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ টিকেট ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন।
র্যাফেল ড্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের মেলায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা মেলা কমিটির সাথে কমিশনের কাজ করছি মাত্র। মুল দায়-দায়িত্ব মেলা কমিটির।
মেলার ঠিক পাশেই চলছে অশ্লীল নৃত্য। সেখানে দর্শকদের মধ্যে উঠতি বয়সের ছেলেরাই বেশি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নবম শ্রেণীর একজন ছাত্র বলেন, নৃত্য দেখার জন্য ২০ টাকায় টিকেট ক্রয় করি। কিন্তু, লজ্জায় বেশিক্ষণ সেখানে থাকতে পারিনি। মেলা প্রাঙ্গণের পাশেই ঝোপঝাড়ে বসেছে জুয়া খেলার আসর। সেখানে প্রতিদিনই লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হচ্ছে। অথচ, প্রশাসন এসব বন্ধে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করছেনা।
মেলা আয়োজন কমিটির পক্ষে সকল কার্যক্রম দেখভাল করছেন খোড়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনিছুর রহমান। তাঁর সাথে রয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধি। মেলায় জুয়া, র্যাফেল ড্র ও অশ্লীল নৃত্য বিষয়ে আনিছুর রহমান কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে, সবাই জড়িত আছে ও মুনাফা ভোগ করছে বলে ইঙ্গিত করেন তিনি।
মিঠাপুকুর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, আম মেলায় র্যাফেল ড্র, জুয়া ও অশ্লীল নৃত্য পরিচালনা বিষয়ে আমার জানা নেই।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন