মুকসুদপুরে পর্নোগ্রাফি ও ধর্ষণ মামলায় দুইজন গ্রেফতার

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় পর্নোগ্রাফি ও নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় ইমরান হোসাইন (৩৭) এবং প্রিয়া আক্তার (৩০) নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল মুকসুদপুর থানা পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে।

ইমরান হোসাইন উপজেলার লোহাইড় গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে। প্রিয়া আক্তার ইমরান হোসাইনের স্ত্রী। গ্রেফতারের পর তাদেরকে আদালতে তোলেন পুলিশ।

ইমরান হোসাইনের বিরুদ্ধে অভিযোগ- তিনি উপজেলার ননীক্ষীর গ্রামের আসাদ মোল্লার স্ত্রীকে তার জমি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে তার নগ্ন ভিডিও মোবাইলে ধারন করেন। নগ্ন ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিক বার তাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

তার নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক বার্তামাধ্যম ইমো ও মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে দেওয়ার এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিরি খানম বাদী হয়ে, ইমরান হোসাইন, ইমরান হোসাইনের স্ত্রী প্রিয়া আক্তার এবং উপজেলার লতিফপুর গ্রামের সাহাদাত মোল্লার ছেলে মামুন মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর মুকসুদপুর ১১/২৩৮।

ইমরান হোসাইনের বিরুদ্ধে ধারা ৮(১), ৮(২), ৮(৩), ৮(৪), ৮(৭) ২০০০ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০১২ জোর পূর্বক ধর্ষণ করিয়া গোপনে উক্ত ভিডিও / স্থিরচিত্র মোবাইল ফোনে ধারণ, সংরক্ষণ ও ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে সরবরাহ করিয়া সামাজিক মান মর্যাদা ক্ষুন্ন সহ গনউপদ্রব্য সৃষ্টি ও সহায়তা করার অপরাধে মামলার প্রধান আসামি ইমরান হোসাইন (৩৭)। দ্বিতীয় আসামি ইমরান হোসাইনের স্ত্রী প্রিয়া আক্তার (৩০) এবং তৃতীয় আসামি করা হয়েছে তার বন্ধু মামুন মোল্লাকে (৩৭)।

মামলার বাদীর এজাহার থেকে জানা যায়, ইমরান হোসাইন একজন দলীল লেখক। দীর্ঘ ৮ মাস পূর্বে বাদী শিরি খানমের বাবার বাড়ীর সম্পত্তি নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তার ননদের পরিচিত উপজেলার লোহাইড় গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে দলিল লেখক ইমরান হোসাইনের সাথে দেখা করেন। ইমরান তাকে জমির কাগজপত্র নিয়ে উকিলের সাথে দেখা করার কথা বলে ফরিদপুরের ভাঙ্গা কোর্টে নিয়ে যায়। উকিল না থাকায় তাকে ইমরানের অজ্ঞাত বোনের বাসায় নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে এবং তা মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে।
এরপর ধারণকৃত নগ্ন ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিক বার তাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ইমরানের স্ত্রী নগ্ন ভিডিও দেখতে পেয়ে ভুক্তভোগীকে ফোন করে, ফোন পেয়ে ক্ষমা চেয়ে ভিডিও ডিলেইড করে দিতে বলে। ভিডিও ডিলেইড না করে ইমরানের বন্ধু মামুন মোল্লাকে সাথে নিয়ে বাদীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সকলকে ভিডিও দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

মুকসুদপুর থানার ওসি তদন্ত শিতল চন্দ্র পাল বলেন, আসামি দুজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। এখন তারা জেল হাজতে আছে। আসামির ব্যাবহারকৃত মোবাইল ফোন জব্দ করে ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য সিআইডিতে প্রেরণ করা হয়েছে।