মুক্তার অসুখ আরোগ্যযোগ্য নয়
বিরল চর্মরোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তামণির অসুখ আরোগ্যযোগ্য নয় এবং সেটি অস্ত্রোপচার করার মতোও নয় বলে জানিয়েছেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা। সম্প্রতি মুক্তামণিকে ভিডিওতে দেখে এবং তার বিভিন্ন টেস্টের প্রতিবেদন দেখে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল এক ই-মেইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে এই মন্তব্য জানায়।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।
ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, মুক্তামণির বায়োফসি করার প্রয়োজন ছিল। তবে তার রক্তের প্লেটলেট বারবার কমে যাওয়ার কারণে বায়োফসি নেয়ার প্রক্রিয়ায় বিলম্ব হচ্ছিল। এ কথা জেনে প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার ব্যাপারে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। গত ২৭ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সাথে বোর্ড মিটিং করা হয়। পরবর্তীতে ই-মেলের মাধ্যমে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল জানায়, মুক্তামণির এই রোগটি ভাল হবার মতো নয়। অপারেশনের করার মতোও নয়। তারা রোগটির পরীক্ষা নীরিক্ষার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে কিন্তু মুক্তার রোগের চিকিৎসা করতে পারবে না।
তিনি বলেন, এরপর গত ২ আগস্ট ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি মেডিকেল বোর্ডের এক সভায় ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সকল প্রকারের সর্তকতা অবলম্বন করে আমরা শনিবার মুক্তার বায়োফসি করার সিদ্ধান্ত নিই। মুক্তার জন্য সকলে দোয়া করবেন।
মুক্তার হাতটি কাটা হচ্ছে কি না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে বোর্ড প্রধান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম বলেন, এই রোগ শুধু চামড়ায় সীমাবদ্ধ নাও থাকতে পারে। মাংসে ছড়িয়ে যেতে পারে। সব কিছু বিবেচনা করেই চিকিৎসা করা হবে। তবে আমরা হাতটি রেখে দেয়ার চেষ্টা করবো।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। মুক্তাকে যখন প্রথম ভর্তি করা হয় তখন ওর হাতের দুর্গন্ধের কারণে সেখানে কেউ থাকতে পারত না। গন্ধও কমেছে। এই চিকিৎসা একটি অপারেশনে শেষ হবে না। ছয় থেকে সাতটি অপারেশন লাগবে। তার শরীর স্বাভাবিক রেখেই কিছু মাংস ও চামড়া প্রতিস্থাপন করা হবে। মুক্তামণির ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তমণির মা বলেন, আমরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসায় খুবই খুশি। দোয়া করবেন চিকিৎসা শেষে সুস্থ মেয়েকে নিয়ে যেন বাড়ি ফিরতে পারি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিরল রোগে আক্রান্ত মুক্তার সংবাদটি প্রকাশিত হয়। ৯ জুলাই জাগো নিউজেও ‘লুকিয়ে রাখতে হয় মুক্তাকে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর মুক্তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। পরে প্রধানমন্ত্রী মুক্তার যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন