মুক্তার হাতের সকল টিউমার অপসারণ, প্রচুর রক্তক্ষরণ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2017/08/muktamoni.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
‘হেমানজিওমায়’ আক্রান্ত সাতক্ষীরার শিশু মুক্তা মনির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। তার হাতের সকল টিউমার অপসারণ করা হয়েছে। অস্ত্রোপচার শেষে তাকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র- আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
অস্ত্রোপচারের সময় মুক্তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলেও জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
মঙ্গলবার সকালে মুক্তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের দ্বিতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। অপারেশন শেষ হয় দুপুর সাড়ে ১২টায়।
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, মুক্তাকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তার হাতের সকল টিউমার অপসারণ করা হয়েছে।
এদিকে মুক্তার অস্ত্রোপচারের সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপস্থিত চিকিৎসকরা। ইতোমধ্যে তাকে পাঁচ ব্যাগ এ-পিজিটিভ রক্ত দেয়া হয়েছে। আরও দুই ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন তার।
এর আগে গত ২৯ অগাস্ট মুক্তামনির দ্বিতীয় দফা অস্ত্রোপচার শুরু করা হলেও জ্বরের কারণে পরে তাকে কেবিনে ফিরিয়ে নেয়া হয়।
মুক্তামনির প্রথম অস্ত্রোপচার হয় গত ১২ অগাস্ট। সেদিন ২০ সদস্যের একটি চিকিৎসক দল প্রায় আড়াই ঘণ্টার জটিল সেই অপারেশনে অংশ নেন।
হাতে বিকট আকৃতির ফোলা নিয়ে গত ১১ জুলাই ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হয় মুক্তামনি। তার রোগটি ‘হাইপারকেরাটসিস’ বা স্কিন ক্যান্সার হতে পারে বলে প্রথমে ধারণার কথা বলেছিলেন চিকিৎসকরা।
রোগ শনাক্ত করতে গত ৫ অগাস্ট তার হাতের টিস্যু সংগ্রহ করে বায়োপসি করা হয়। পরে ডা. সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড মুক্তা মনির রোগটি হেমানজিওমা বলে শনাক্ত করেন।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, হেমানজিওমা হলো শিশুদের রক্তনারীর মধ্যে টিউমার, যেগুলো সাধারণত ক্যান্সারপ্রবণ হয় না। এরকম টিউমার শিশুদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়। ত্বকের উপরিভাগে লাল গুটির মত দেখতে এই টিউমার বেশিরভাগ সময় চিকিৎসা ছাড়াই মিশে যায়।
অধিকাংশ শিশুর ক্ষেত্রে এই টিউমার বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না। তবে ফেটে গেলে তা যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে; রক্তপাতও হতে পারে।
আবার টিউমারের আকার ও অবস্থানের ওপর নির্ভর করে এটা বিকৃত হয়ে যেতে পারে এবং স্নায়তন্ত্র বা মেরুদণ্ডের ওপর হলে জটিলতা বড় হয়ে দেখা দিতে পারে।
ত্বক ছাড়াও যকৃত ও ফুসফুসের মতো অভ্যন্তরীণ অঙ্গেও হেমানজিওমা হতে পারে।
মুক্তা মনির বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, দেড় বছর বয়সে মুক্তার ডান হাতে একটি ছোট গোটা দেখা দেয়। পরে তা বাড়তে বাড়তে বছর চারেক আগে এমন পর্যায়ে যায় যে স্বাভাবিক চলাফেরা ব্যাহত হয়।
১২ বছরের মেয়েটির আক্রান্ত হাতটি ফুলে দেহের চেয়ে ভারি হয়ে উঠলে তার শরীর শুকিয়ে যেতে শুরু করে। ওই হাতের কারণে সে সব সময় যন্ত্রণায় অস্থির থাকত বলে জানান তার বাবা।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন