মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নির্মোহ দৃষ্টিতে দেখা উচিৎ ডা. আলতাফ উদ্দিন

মুক্তিযুদ্ধাকালীন সময় ও ইতিহাসকে বিভিন্ন সরকার অপব্যাখ্যা দিয়ে বিতর্কিত করেছে। নিজেদের স্বার্থের অনুকুলে ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে। অথচ দেশ ও জাতির স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে নির্মোহ দৃষ্টিতে দেখা উচিৎ।
২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. আলতাফ উদ্দিন আহমেদ।
বরিশাল জিলা স্কুলের আয়োজনে মঙ্গলবার বেলা ১১টায় স্কুলের হলরুমে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন জিলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিতা রানী হালদার। আরো বক্তব্য রাখেন শিফট প্রধান মোঃ ফারুখ আলম ও সোহরাব হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইংরেজী শিক্ষক রিয়াজুল ইসলাম।
প্রধান আলোচক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. আলতাফ উদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুসংগঠিত আন্দোলন ব্যতীত যেমন স্বাধীনতা আসতো না তেমনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের তেজদীপ্ত ঘোষণা ছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরু হওয়ার সম্ভাবনাও ছিল না। যদিও স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রধান বিরোধী ছিল মুসলিম লীগের সদস্যরা কিন্তু একাত্তর সালে সুকৌশলে ইসলাম পন্থীদের মুক্তিযুদ্ধে প্রতিপক্ষ হিসেবে তৈরী করা হয়েছিল।
বিশ্বব্যাপী ইসলাম ফোবিয়া থেকেই পরিকল্পিত ভাবে বিশ্বের কাছে ইসলামপন্থীদের ভিলেন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। অথচ গণহত্যা কিংবা কোন অপরাধ সংগঠনের সাথে ইসলাম পন্থীরা জড়িত থাকার কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়না। গনহত্যায় মাসব্যাপী বিহারী হত্যার কোন উল্লেখ কেউ করে না। ভারতের স্বার্থে মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীকে ভারতীয় পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার (একজন জেসিও) জেনারেল অরোরার অধীনস্থ হিসেবে দেখানো হয়েছে।
১৬ তারিখ বিজয় অর্জিত হলেও বাংলাদেশ সরকারকে ঢাকায় আসতে দেওয়া হয় ২২ তারিখ, এ ছয় দিন বাংলাদেশ পুরোপুরি ভারতীয় বাহিনীর দখলে থেকে যায়। আর ছয় দিনে বাংলাদেশ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার (স্বর্ণের ভরি ১৭১ টাকা মূল্য ধরে) বিভিন্ন মালামার লুঠ করে নিয়ে যায়। প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিল কারারুদ্ধ হন।
ইতিহাসে এ সবকিছুই স্থান পেতে হবে। ৩ লাখ না ৩০ লাখ, ২লাখ না ২ হাজার-এ সংখ্যারও শুরাহা হওয়া প্রয়েজন। শেখ মুজিব মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত জানতেনই যে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এসব ইতিহাসকে স্বার্থান্বেষী মহল ভিন্ন ভাবে উপস্থাপন করে এতদিন জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে। এখন সময় এসেছে আমাদের প্রজন্মকে আসল ইতিহাস জানাতে হবে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন