মুঠোফোনে মিলবে ভূমির তথ্য

ভূমি অফিসে যাওয়ার দরকার হলে অনেকেই আঁতকে ওঠেন। ভূমি সংক্রান্ত কাজে নির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি অর্থ আদায়, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য, কাগজপত্রের জালিয়াতি, দীর্ঘসূত্রতা—এসব বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ খবর প্রায়ই শোনা যায়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ভূমি সংক্রান্ত মামলার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। একবার এ মামলা শুরু হলে আর প্রায় শেষ হয় না।

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার ভূমি কার্যালয় এবার এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটাল। ভূমি সংক্রান্ত তথ্য সেবা ও অভিযোগ গ্রহণের জন্য কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের ভূমি কার্যালয় থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সোমবার এ সেবা চালু হয়েছে। এখন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে জমির মালিকেরা মুঠোফোনের (০১৯৩৩৪৪৪০৫৫) জমি সংক্রান্ত তথ্য ও সব ধরনের বিষয়ে জানতে পারবেন।

কেরানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান বলেন, ‘আমরা মানুষের ভোগান্তি কমাতে চাই। ভূমির মালিকদের ভূমি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের জন্য ভূমি কার্যালয়ে আসতে হয়। অনেকে ভূমি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগপত্র দিয়ে থাকেন। এখন থেকে আর ভূমি মালিকদের তথ্য সংগ্রহ ও অভিযোগের জন্য ভূমি কার্যালয়ে সময় নষ্ট করে আসতে হবে না।’

ভূমি অফিস সূত্র জানায়, রোববার থেকে বৃহস্পতিবার এই সেবা দেওয়া হবে। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মুঠোফোনটি খোলা থাকবে। সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন এ ফোন বন্ধ থাকবে। অভিযোগ, ভূমির তথ্য এখানে লিখে রাখা হবে। জানানো হবে মালিকদের।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুর এলাকার দলিল লেখক মনিরুজ্জামান বলেন, ফোন চালুর হওয়ার পরই আজ তিনি জমির দাগ নম্বর জানতে চান। মুঠোফোন থেকে তাঁকে কিছুক্ষণের মধ্যেই এ তথ্য জানানো হয়। তিনি বলেন, ‘এটা করাতে অর্থ ও সময় দুই-ই বাঁচবে। আমরা এর উপকার পাব। কিন্তু এটা যেন বন্ধ না হয়।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাকিব হাসান আশ্বাস দেন, আমরা এটা চালু করেছি মানুষের ব্যবহারে জন্য। এটা চালু থাকবে। সাধারণ মানুষ এর সর্বোচ্চ সুবিধা নিক।

ভূমির তথ্যের জন্য কেরানীগঞ্জের সহকারী কমিশনারের মুঠোফোন চালু করার উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব প্রদীপ কুমার দাস। তিনি বলেন, ‘ভূমি সংক্রান্ত সেবার নতুন ক্ষেত্র উদ্ভাবনের নানা পরামর্শ মন্ত্রণালয় থেকে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দেওয়া আছে। মুঠোফোন ব্যবহার করে মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার যেকোনো সুযোগ আমরা কাজে লাগাতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘কেরানীগঞ্জের এই অভিজ্ঞতা অন্যরা নিতে পারে। আমরা একে স্বাগত জানাব।’

ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কর মেলার মতো ভূমি মেলার আয়োজন, ভূমি সপ্তাহ পালন, প্রতিটি ভূমি অফিসে একটি ডেস্ক স্থাপন, তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা নিয়োগের মতো বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।