মুসলিম বলে বাসা ভাড়া পাচ্ছেন না রেজাউল!
বাসা নেবেন। পেশা, ভাড়ার পরিমাণ নিয়ে কথাবার্তা। এরপর পরিচয় জেনে নেয়া। সবকিছু ঠিক, তবে একটা জায়গায় এসে গোলমাল বেঁধে যাচ্ছে। নামটা শুনেই মুখের ওপর ‘না’ করে দিচ্ছেন বাড়ির মালিক।
রেজাউল করিমের জন্ম, শৈশব এবং বেড়ে ওঠা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে। স্কুল, মেডিকেল কলেজ, চিকিৎসক হিসেবে পেশা জীবন- তা-ও এখানেই। তবু মাথা গোঁজার জন্য কলকাতা শহরে তিনি ভাড়ায় বাসা পাচ্ছেন না। কারণ, তিনি সংখ্যালঘু!
নিজের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর এবং রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে চিঠি দিয়েছেন ওই সরকারি চিকিৎসক। খবর আনন্দবাজার’র।
কলকাতার একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওই শিক্ষকের অভিযোগ, ‘ভাড়ায় ঘর চাই শুনে শুরুতে কোনো বাড়ির মালিকই আপত্তি করেননি। কিন্তু পরে নামটা শুনেই মুখ ফিরিয়ে নেন তাদের প্রত্যেকেই!’
তার আক্ষেপ, ‘যেখানেই যাই, প্রাথমিক কথাবার্তায় সকলেই সন্তুষ্ট হন। তার পরে যেই আমার নাম শোনেন, তখনই বলেন- আপাতত বাড়ি ভাড়া দেওয়া সম্ভব নয়। কেউ বা বলেন- পরে খবর দেব। সেই পর অবশ্য আর আসে না।’
ওই চিকিৎসক জানান, দক্ষিণ কলকাতার একটি বাড়িতে তার নাম শোনার পর বাড়ির মালিক বলেন- ‘আমার স্ত্রী বাড়িতে পুজোআর্চা করেন তো। আপনাকে তাই বাড়ি ভাড়া দিতে পারব না।’
রেজাউলের বাড়ি বীরভূমে। কর্মসূত্রে বিভিন্ন জেলায় থেকেছেন। ২০০৩ সাল থেকে কলকাতার হেস্টিংসে সরকারি আবাসনে সপরিবার ভাড়ায় থাকছেন তিনি। অভিযোগ, সেই আবাসনের একাধিক অংশ ভাঙা। বর্ষায় বাসায় পানি পড়ছে। গত ১০ বছরে একাধিকবার সরকারি দফতরে সে-কথা জানিয়েও ফল হয়নি। চলছে টালবাহানা।
তিনি বলেন, ‘এই ফ্ল্যাটটি এখন কার্যত বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। তাই স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকার জন্য ভাড়াবাসা খুঁজছিলাম। কিন্তু ঘর খুঁজতে গিয়ে প্রতি মুহূর্তে অপমান জুটছে। এমনকি আমার নাগরিকত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।’
উল্লেখ্য, মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুর, রাজাবাজার, পার্ক সার্কাসের মতো কিছু এলাকা বাদ দিলে কলকাতা শহরের অন্যত্র মুসলিমদের বাড়ি ভাড়া পাওয়া নিয়ে সমস্যা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন