মুসলিম ভূগোলবিদ ইবনে হাওকালের অবদান
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য।সাইয়্যিদুল মুরসালীন ইমামুল মুরসালীন নূরে মুজাসসাম রাসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরুদ শরীফ ও সালাম। মুসলিম ভূগোলবিদগন পৃথিবীর মাটি, সাগর, বাতাস, আবহাওয়া, মাপজোক, জরিপ কোন কিছুই বাদ দেননি। মুসলমানরাই ভূগোলের গোলক (গ্লোব) ও মানচিত্র তৈরী করেছেন।
বর্তমান ভূগোলের যত উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে তার পুরো কৃতিত্বই মুসলমান ভূগোলবিদদের। সাগর, অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ, স্থলভূমি ও আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি ইত্যাদি সম্বন্ধে মুসলমানদের উন্নত মানের যন্ত্র ও নির্ভুল তাত্ত্বিক তথ্য ছিল।
আজকে আমরা আলোচনা করবো মুসলিম ভূগোল বিজ্ঞানী “ইবনে হাওকাল” উনাকে নিয়ে। উনার পুরো নাম হচ্ছে – আবুল কাসিম ইবনে হাওকাল আবুল কাসিম ইবনে হাওকাল ইন্তেকাল করেন (হিজরী ৩৭৭, ঈসায়ী ৯৮৮):তিনি ৩৩১ হিজরী (ঈসায়ী ৯৪২) সালে বাগদাদ ত্যাগ করে সুদীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে তিনি গোটা মুসলিম জাহান ভ্রমণ করেন। অতঃপর তিনি উনার বিখ্যাত ভূগোল বিজ্ঞান “কিতাব আল মাসালিক ওয়াল মামালিক” রচনা করেন। তিনি ৩৬৬ হিজরী (৯৭৭ ঈসায়ী) সালে “সুরাত-আল-আরদ” নামক কিতাব রচনা করেন যাতে স্পেন, ইটালি ও সিসিলীর মুসলিমদের বর্ণনা করেছেন। তিনি ৩০ বছর এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা ভ্রমন করেছেন।ইবন হাওকাল ছিলেন ৪র্থ থেকে ১০ ম শতাব্দীর ভুলোগলবিদ। উনার প্রণীত ভুগোল গ্রন্থ ‘কিতাবুল মাসালিক ওয়াল মামালিক’ মুসলিম জগতের সর্বপ্রথম ভূগোল গ্রন্থ যা ইংরেজিতে অনূদিত হয়ে পাশ্চাত্য জগতে প্রকাশিত হয়। এই কিতাবটি অনুবাদ করা হয়েছে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে, অনুবাদ করেছে William Ouseley , অনুবাদকৃত বইটি লন্ডন থেকে প্রকাশ হয়।
ভূগোল নিয়ে মুসলমানদের রচিত সব কিতাবেই খুটি-নাটি সহ সবকিছুই আলোচনা করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভৌগলিক বিবরণসহ – ভূসংস্থান, পথঘাট, গাণিতিক, প্রাকৃতিক, জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক, মানবিক ও অর্থনৈতিক প্রসঙ্গ নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে।
ইবনে হাওকাল তিনি উনার গ্রন্থে তৎকালীন মুসলিম জগত নিয়েও আলোচনা করেছেন। যার মধ্যে অন্তভুক্ত ছিলো- পথ-ঘাট, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত সম্বন্ধে এসব বিষয়ে তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
তিনি ভৌগলিক অবস্তান দ্রাঘিমা অক্ষরেখায় স্থানাঙ্কের বিবরণও দিয়েছেন। এবং ভারত সম্বন্ধে আলোচনা করার সময় সিন্ধু নিয়েও আলোচনা করেছেন, সিন্ধুর নগর-শহর, বিভিন্ন স্থানের দূরত্ব, সিন্ধুর নদী ইত্যাদি । উনার এই গ্রন্থে উল্লিখিত স্থানগুলোর এক অন্য থেকে দূরত্ব দেখানো হয়েছে। ফাসাং, মারহালা, মসযিল, মিল, কতদিনে পথ ইত্যাদি সংজ্ঞা আলোকপাত করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন