মুসলিম রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে ফিলিপাইন

মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিজ দেশে আশ্রয় দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তো। বৃহস্পতিবার তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন। ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, মিয়ানমারের যেস্থানে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর ‘গণহত্যা’ হয়েছে, সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়াদের তিনি স্বেচ্ছায় আশ্রয় দিবেন। এই কাজে তাকে ইউরোপ সাহায্য করবে। খবর: সাউথ চায়না মনিটরিং।

জাতিসংঘের মানবাধিকার গ্রুপ বলছে, গতবছরের আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ ছাড়াও পশ্চিমা দেশগুলোর ভাষ্যে, রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ‘জাতিগত নিধন’ চালিয়েছে। যদিও মিয়ানমার সব সময় তা অস্বীকার করে বলছে, ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে তারা আইনগতভাবেই অভিযান চালিয়েছে।

প্রেসিডেন্টের বাসভবনে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে রদ্রিগো দুতের্তো রোহিঙ্গা ইস্যু ছাড়াও মাদকের বিরুদ্ধে তার যুদ্ধ এবং তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্ত প্রসঙ্গে কথা বলেন।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি রোহিঙ্গাদের দুর্দশা তুলে ধরে আপ্লুত হয়ে পড়েন। বলেন, ‘আমি সত্যিই তাদের (রোহিঙ্গা) জন্য দুঃখবোধ করি। আমি শরণার্থী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে আগ্রহী। আমি তাদের সহায়তা করতে চাই। আমরা তাদেরকে ইউরোপোর থেকে আলাদা করতে চাই না।’

এ সময় রদ্রিগো দুতের্তো মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অক্ষমতাকেও দায়ী করেন।

তিনি বলেন, ‘তারা (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান চায় না। তাদের এই অবস্থানকেও আমি গণহত্যাই বলব।’

তবে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জো হোতায় রাখাইনে ‘গণহত্যা’ হয়েছে বলে ফিলিপাইন প্রেসিডেন্টের বক্তব্যকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘রদ্রিগো দুতের্তোর বক্তব্য কখনোই সঠিক পরিস্থিতির প্রতিফলন করে না।’

জো হোতায় বলেন, ‘তিনি (দুতের্তো) মিয়ানমারের পরিস্থিতি সম্পর্কে কিছুই জানেন না। সব সময়ই বিভিন্ন বিষয়ে তিনি ভারসাম্যহীন বক্তব্য দেন। এটিও তেমনই একটি বক্তব্যমাত্র।’

ফিলিপাইন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। পরে প্রেসিডেন্ট অফিস থেকেও লিখিত বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে পাঠানো হয়।

ফিলিপাইন এবং মিয়ানমার উভয়েই আসিয়ানের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরেই দেশ দুটি পরস্পরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইস্যুতে কড়া সমালোচনা করে আসছে।

রদ্রিগো দুতের্তো বিভিন্ন দেশে গিয়েও মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চির নাম না নিয়ে রোহিঙ্গা নির্যাতন ইস্যুতে তার ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন।