মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে বেসামরিক বিমান চলাচল আইন পাস
বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির জন্য মৃত্যুদণ্ডসহ নেভিগেশনের অনুরূপ আলো বা সংকেত ব্যবহার করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রেখে বেসামরিক বিমান চলাচল আইন পাস হয়েছে সংসদে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের বৈঠকে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলটি পাস করার প্রস্তাব করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। বিলটির ওপর আনীত সংশোধনী, যাচাই ও বছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলের সপ্তম অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করলে মৃতদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়বিদ দণ্ডনীয় হবেন। বিমানের নেভিগেশনের অনুরূপ বা সাদৃশ্যপূর্ণ আলো বা সংকেত ব্যবহার করলে অনধিক যাবজ্জীবন করাদণ্ড বা অনধিক পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।’
বিপজ্জনক পদ্ধতিতে বিমান চালানো ও অপরাধ সংঘটনের সহায়তার জন্যও একই দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত বিমানের যন্ত্রাংশ বা মালামাল সরিয়ে ফেললে সাত বছরের কারাদণ্ড ও অপসারিত যন্ত্রাংশের দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। একইভাবে বিমানে বিপজ্জনক কোনো পণ্য পরিবহন করলে তার জন্য অনধিক সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডনীয় হবেন। একই দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে অবৈধভাবে বাংলাদেশের আকাশ সীমা লঙ্ঘনের জন্য।
এছাড়া নিবন্ধন, লাইসেন্স, পারমিট জাল করাসহ আইনের বিধান লঙ্ঘন করার জন্য পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক এক কাটি টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডিত হবেন। রেকর্ড সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে এয়ার অপারেটররা যদি মিথ্যা প্রতিবেদন দেন এজন্য অনধিক তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ লাখ টাকা অর্থ দণ্ড বা উভয় দণ্ডনীয় হবেন। তদন্তের স্বার্থে কোনো ব্যক্তি রেকর্ডপত্র, দলিলের তথ্য উপস্থাপন করতে অস্বীকার করেন, তার জন্য এক বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক দশ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডিত হবেন।
বিলে বলা হয়, পারমিট ব্যতীত কোনো বিদেশি এয়ার অপারেটর বাংলাদেশে কোনো বাণিজ্যিক বিমান পরিবহন সেবা দিতে পারবে না। এজন্য রাষ্ট্রের সঙ্গে বিমান চলাচল চুক্তি থাকতে হবে। বিদেশি অপারেটরদের বিক্রয় প্রতিনিধি নিয়োগের ক্ষেত্রে শতভাগ নিবন্ধিত বাংলাদেশি নাগরিকের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগের শর্ত আরোপ করা হয়েছে। তবে বিদেশি অপারেটর এবং তার বিক্রয় প্রতিনিধির মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে, বিরোধ চলাকালীন পরিবহন সেবা বন্ধ করা হবে না।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত কনভেশন বাস্তবায়নের জন্য বেসামরিক বিমান চলাচলের সুরক্ষা, নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ এবং এ বিষয়ে যুগোপযোগী বিধান করার লক্ষে সিভিল এভিয়েশন অর্ডিন্যান্স ১৯৬০ রহিতক্রমে নতুন আইন প্রণয়ন প্রয়োজন। তাই অধ্যাদেশটি রদক্রমে নতুনভাবে বেসামরিক বিমান চলাচল আইন ২০১৭ প্রণীত হয়েছে। আর্থিক সংশ্লিষ্টতা থাকায় এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নেয়া হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন