মেডিক্যালের প্রশ্নফাঁস : সিআইডির সন্দেহে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস
সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল, আর্মডফোর্সেস মেডিক্যাল কলেজের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সন্দেহে রয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস। ওই প্রেসে কর্মরত সদস্য বা তাদের পরিবারের কেউ মেডিক্যালের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে জানায় সিআইডি।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে সংবাদে সম্মেলনে এ কথা জানান জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস। এ ঘটনায় অধিদপ্তরের কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
সিআইডি জানায়, সন্দেহভাজন হিসেবে গত ১৯ জুলাই এস এম সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় আরো পাঁচজনকে। গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সিআইডি জানায়, প্রেসের মেশিনম্যান সালাম এবং তাঁর খালাতো ভাই জসীম- এ দুজন মিলে গড়ে তুলেছিলেন এ চক্র। দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে পুরো চক্রটিকে চিহ্নিত করেছে সিআইডির তদন্তকারী দল।
সুমন কুমার দাস বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মেডিক্যাল, ডেন্টাল কিংবা আমর্ডফোর্স মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হওয়াটা মেধাবী শিক্ষার্থীদের একটা স্বপ্ন। এ চক্রের কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন ব্যর্থ হয়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের মাধ্যমে কম মেধাবী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ওই মামলায় ১২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয় সিআইডি। যার মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত ছিল ৪৭ জন। এদের মধ্যে ৪৬ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় তদন্ত করার সময় ২০১৮ সালে একটি চক্রের সন্ধান পায় সিআইডি।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য হিসেবে ২০১৩ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছাপাখানা থেকে মেডিক্যাল ও ডেন্টালে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র টাকার বিনিময়ে ফাঁস করত। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় এজাহার নামীয় ১৪ জনসহ ১৫০ থেকে ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সিআইডি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস থেকে প্রশ্ন বের হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সুমন কুমার দাস বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, ১৯৮৮ সাল থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে একটি প্রেস থেকে মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ছাপানো হয়। ওই প্রেসে চাকরি করে এমন সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা হয়তো এসব কাজে যুক্ত থাকতে পারে।
এ সময় সাইবার ক্রাইমের ডিআইজি মো. শাহ আলমসহ সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন