মোবাইল ইন্টারনেটে ‘প্যাকেজ শর্ত’ তুলে দিলো বিটিআরসি
মোবাইল ইন্টারনেটের প্যাকেজের সীমা তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ফলে গ্রাহকের চাহিদা বিবেচনা করে বিভিন্ন মেয়াদের প্যাকেজ অফার করতে পারবে অপারেটর কোম্পানিগুলো। গ্রাহকরাও সর্বনিম্ন মেয়াদে অর্থাৎ, ঘণ্টার হিসাবেও প্যাকেজ কিনে ব্যবহার করতে পারবেন।
রোববার (১২ জানুয়ারি) বিটিআরসির জারি করা ‘মোবাইল অপারেটরসমূহের ডাটা ও ডাটা সংশ্লিষ্ট প্যাকেজ’ সম্পর্কিত নির্দেশিকায় এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়।
২০২৩ সালের অক্টোবরে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের নির্দেশনায় এ নিয়ে নির্দেশিকা করেছিল বিটিআরসি। তাতে প্যাকেজের সংখ্যা সর্বোচ্চ ছিল ৪০টি। এছাড়া মেয়াদ ৭ দিন, ৩০ দিন ও আনলিমিটেড (নির্দিষ্ট মেয়াদহীন) করা হয়। বিষয়টি নিয়ে অপারেটররা অসন্তুষ্টি জানিয়ে আসছিল।
মূল প্যাকেজ হবে তিনটি
নতুন নির্দেশিকায় অপারেটররা তিন ধরনের প্যাকেজ দিতে পারবে। প্রথমটি হলো- নিয়মিত প্যাকেজ। এ প্যাকেজগুলো সব গ্রাহকের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এর মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন ১৫ দিন।
গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজ। এটিতে গ্রাহকের ব্যবহার ও গ্রাহকপ্রতি গড় রেভিনিউর ওপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির গ্রাহকের জন্য। এ ধরনের প্যাকেজের মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন তিনদিন।
এছাড়া রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্যাকেজ নামে একটি প্যাকেজ বাজারের অবস্থা ও চাহিদা যাচাই-বাছাই করতে এবং ধরন বুঝতে গ্রাহকদের দেওয়া হবে। এটার মেয়াদ হবে সর্বনিম্ন ৭ দিন।
সুযোগ থাকছে ১-৩ দিন মেয়াদি প্যাকেজেরও
তিন প্যাকেজের বাইরেও গ্রাহকের স্বার্থ ও আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় অপারেটররা নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী প্যাকেজ নির্ধারণ করতে পারবে। তার আওতায় ঘণ্টাভিত্তিক ও ১-৩ দিন মেয়াদি প্যাকেজ করার সুযোগ দিয়েছে বিটিআরসি।
নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতি ঘণ্টার জন্য সর্বোচ্চ ২০০ এমবি (মেগাবাইট), এক দিনের জন্য সর্বোচ্চ ৩ জিবি (গিগাবাইট), দুদিনের জন্য সর্বোচ্চ ৫ জিবি এবং তিন দিনের জন্য সর্বোচ্চ ৮ জিবি প্যাকেজ দিতে পারবে অপারেটররা।
থাকছে আনলিমিটেড প্যাকেজও
গ্রাহক যাতে তার সুবিধা অনুযায়ী প্যাকেজ গ্রহণ করতে পারে, সে জন্য ‘ফ্লেক্সিবল প্ল্যান’ হিসেবেও একটি প্যাকেজ থাকবে। এছাড়া মেয়াদবিহীন অর্থাৎ, আনলিমিটেড প্যাকেজও থাকবে। তবে সেক্ষেত্রে সময়সীমা নির্ধারণ করে দিতে হবে।
যে কোনো প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগে গ্রাহককে এসএমএসের মাধ্যমে সে বিষয়ে জানাতে হবে। অবশ্য রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ঘণ্টা ও মিনিটভিত্তিক কোনো প্যাকেজ দেওয়া যাবে না।
ক্যারি ফরোয়ার্ড বহাল
কোনো ডাটা প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অব্যবহৃত ডাটা থেকে গেলে, তা ‘ক্যারি ফরওয়ার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যদি গ্রাহক একই প্যাকেজ আবার কেনেন, তাহলে পরের প্যাকেজে অব্যবহৃত ডাটা ব্যবহার করা যাবে।
নতুন নির্দেশিকায় যেসব প্যাকেজ ও মেয়াদ দেখা যাচ্ছে, তা এরই মধ্যে গ্রাহকরা কিনতে পারছেন। অপারেটররা জানিয়েছে, তিন সপ্তাহ আগে বিটিআরসি পরীক্ষামূলকভাবে এসব প্যাকেজ চালু করতে নির্দেশনা দিয়েছিল। তাতে ভালো সাড়া পাওয়ায় সেটা চূড়ান্ত করা হয়েছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন