‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গিনেতা রিজওয়ান হারুন গ্রেপ্তার
দেশের কালো তালিকাভুক্ত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুসলিমিনের (জেএম) ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নেতা রিজওয়ান হারুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জঙ্গিনেতা হারুন জেএম’র প্রত্যক্ষ মদদ দাতা।
রোববার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির (রোড নং-৬/এ) ঈদগাহ মসজিদের সামনে থেকে রেজওয়ানকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম।
রিজওয়ান হারুন লেকহেড গ্রামার স্কুলের সাবেক মালিক। সে ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গুলশান থানায় দায়ের হওয়া সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
রোরবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে রেজওয়ান হারুনকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই চিঠির আলোকে ৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে উপ-সচিব হাবিব মো. হালিমুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ সদর দপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুর রহমান জানান: রিজওয়ানসহ জামাতুল মুসলিমিনের অন্যরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসা, মসজিদ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন হারুন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিজস্ব অফিসে দাওয়াতের কাজ পরিচালনা করতো।
তিনি বলেন: এই সংগঠনের সদস্যরা জঙ্গি কার্যক্রম দ্রুত বিস্তারের জন্য বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলসহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। তারই কার্যক্রম হিসেবে রিজওয়ান ২০০৬ সালে লেকহেড গ্রামার স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা লতিফ আহম্মেদের কাছ থেকে কিনে নেয়। পরে সে এখানে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মস্তিস্কে ইসলামী জঙ্গিগোষ্ঠীর কার্যকলাপ সম্পর্কে জিহাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। এই স্কুলটি আসামি রিজওয়ান জঙ্গি প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবহার করতো।
এ বিষয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী অবগত হলে রিজওয়ান হারুন কৌশলে ২০১৭ সালে অপর আসামি খালেদ হাসান মতিনের কাছে লেকহেড গ্রামার স্কুলটির স্বত্ব বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যায়।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে জামাতুল মুসলিমিনের কার্যক্রম আইন-শৃংখলা বাহিনীর নজরে আসলে সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
রেজওয়ান ব্রিটেনে থাকা অবস্থায় জামাতুল মুসলেমিন নেতা আবু ইসা আল রাফাই (জর্ডান থেকে ব্রিটেনে বসবাসকারী) এর মাধ্যমে সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হয়। ২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশে সে জামাতুল মুসলিমিন সংগঠিত করার কাজ শুরু করে।
ডিবি জানায়, জামাতুল মুসলিমিন প্রথমে দেশের ১৩ জেলায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৫ সালে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তারা আরসিইউডি (রিসার্স সেন্টার ফর ইউনিটি ডেভেলপমেন্ট) ছদ্মবেশে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে।
সর্বশেষ জামাতুল মুসলিমিনের আমির ছিলো একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রেজাউর রাজ্জাক। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পর ড. রেজাউর রাজ্জাক মালয়েশিয়া পালিয়ে যায়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন