ম্যানচেস্টারে যেভাবে বেঁচে গেল বাংলাদেশি পরিবারটি
মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাই হয়তো শেষ পর্যন্ত এক বিরাট বিপদ থেকে রক্ষা করেছে ম্যানচেস্টারের বাংলাদেশি চিকিৎসক নজরুল ইসলামের পরিবারকে।
বহু আগে থেকে প্রিয় শিল্পী আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্টের টিকেট কেটে রেখেছিলেন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে, কিন্তু পরীক্ষার কারণে শেষ পর্যন্ত আর সেখানে যাওয়া হয়নি তাঁর। বাবাকে ফোন করে কাঁদতে কাঁদতে মেয়ে বলছিলেন, “বাবা, আমরা সবাই হয়তো আজ শেষ হয়ে যেতে পারতাম।”
বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ডা: নজরুল ইসলাম ম্যানচেস্টার হামলার পর যে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে গেছেন, তার বর্ণনা দিয়েছেন।
ম্যানচেস্টার এরেনায় আত্মঘাতী বোমা হামলার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডাঃ নজরুল ইসলাম তাঁর মেয়ের কাছ থেকে একটা ফোন পান।
তাঁর মেয়ে ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির ছাত্রী। আরিয়ানা গ্রান্ডে তাঁর মেয়েরও প্রিয় শিল্পী।
ওইদিন আমার মেয়ে এবং ওর কয়েকজন বান্ধবীর ওই কনসার্টে যাওয়ার কথা ছিল। ওরা অনেক আগে থেকে ওই কনসার্টের টিকিট কেটে রেখেছিল। কিন্তু আমার মেয়ের পরীক্ষা থাকায় ওইদিন আর সে যায়নি। তার অন্য বান্ধবীরা গেছে। সে যেতে পারে নি।
ঘটনার পাঁচ সাত মিনিটের মধ্যেই আমার মেয়ে আমাকে ফোন করে। ও জানায়, বাবা ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। ও খুবই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কান্নাকাটি করছিল। ঘটনা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গেলেন নজরুল ইসলাম।
আমরা সবাই যেন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেলাম। এই অ্যারেনা কিন্তু ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্টদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। আমার অন্য মেয়েরাও এখানে যায়, যখনই তাদের কোন প্রিয় শিল্পীর কনসার্ট হয়। আমি জানতে চাইলাম, তোমার ফ্রেন্ড যারা গেছে, ওরা কেমন আছে।
ও জানালো, বন্ধুরাই ওকে ফোন করে জানিয়েছে ওরা সবাই সুস্থ এবং নিরাপদ আছে। কিন্তু আজ এমন অবস্থা হতে পারতো যে আমরা সবাই শেষ হয়ে যেতে পারতাম।
আমি তো তখন আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি, একটা বড় বিপদ থেকে আমরা বেঁচে গেছি। আজকে একটা অন্যরকম অবস্থা হতে পারতো। সারা রাত আমার মেয়ে কিন্তু ঘুমায় নাই। আমরাও ছিলাম আতঙ্কে। কি বিপদ থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করছেন।
যারা এই ঘটনায় তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাদের জন্য আমি খুবই মর্মাহত। এর চেয়ে বড় দুঃখজনক ঘটনা আমার মনে হয় আর কিছু হতে পারে না। বাবা মা যখন তার কম বয়সী সন্তানকে হারায়।
একটা প্রবাদ আছে, সবচেয়ে ভারী জিনিস হচ্ছে বাবা মায়ের কাঁধে সন্তানের লাশ। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না।-বিবিসি বাংলা
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন