মৎস্য আহরণে জেলেদের পদচারণায় মুখরিত সুন্দরবন

জুন, জুলাই ও আগস্ট- এই তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া, মধু আহরণে জেলেরা প্রবেশ করতে শুরু করেছেন। জেলেদের পদচারণে সুন্দরবন আবারও সরব হয়ে উঠছে। পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের ১৬টি ফরেস্ট স্টেশন থেকে ১২ হাজার বৈধ বিএলসিধারী জেলে পাস-পারমিট নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া শিকার করছে। এমনটাই জানিয়েছেন, পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহাম্মদ মহসিন হোসেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্ধেক বিএলসিধারী জেলে পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন।

মাছের জন্য খেওলা, চরপাতা ও গয়স্য জালের পাস ইস্যু করা হয়েছে। রেকর্ডসংখ্যক কাঁকড়ার পারমিট নিয়েছেন জেলেরা। তবে মধু আহরণের জন্য এখন পর্যন্ত ফরেই স্টেশন থেকে মৌয়ালরা পাস গ্রহণ করেননি। স্টেশন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন দু-এক দিনের মধ্যে মধু সংগ্রহের পাস নিতে মৌয়ালরা হাজির হবেন।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় কয়রার দেউলিয়া মাছের আড়ত ও বেদকাশির ফুলতলা আড়তে গিয়ে দেখা যায়, সুন্দরবনের চিংড়ি, দাতনে, পারশে, কাউন, পায়রা, চ্যাটাবেলে, ভেটকি, পেশাসহ অন্যান্য মাছে আড়ত ভরে উঠেছে। তবে ছোট প্রজাতির মাছের পরিমাণ বেশি দেখা যায়। বন বিভাগের নির্দেশনা না মেনে অনেক জেলে ঘন ফাঁসের চরপাতা ও ভেষালি জালে মাছ শিকার করায় চিংড়িসহ ছোট মাছ বেশি ধরা পড়েছে। তবে রেকর্ড পরিমাণ মাছ জালে ধরা পড়ায় জেলেরা বেশ খুশি।

৫ নম্বর কয়রা গ্রামের জেলে গোলাম সরদার জানান, তিন মাস পর কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন থেকে পাস নিয়ে গত রবিবার রাতে সুন্দরবনে চরপাতার জালে মাছ ধরতে গিয়ে
আশানুরূপ মাছ পেয়েছি। মহেশ্বরীপুরের জেলে আজিজল জানায়, বানিয়াখালী ফরেস্ট স্টেশন থেকে পাস নিয়ে বনে মাছ শিকার করে প্রথম দিনে ভালো মাছ পেয়েছি। তিন মাস পর পাস পারমিট চালু হওয়ায় জেলেদের চোখে মুখে হাসির ছাপ লক্ষ করা গেছে।

কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা নির্মল কুমার মণ্ডল বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম দিনে পাঁচ শতাধিক বিএলসিধারী জেলে তার স্টেশন থেকে মাছ, কাঁকড়ার পারমিট নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছে। তবে তারা যেন ছোট প্রজাতির মাছ শিকার করতে না পারেন সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়েছে। এ জন্য অভিযান অব্যাহত থাকবে।