শ্রমিক নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর হুশিয়ারি
‘যতদিন ক্ষমতায় আছি, বিদেশে নালিশ করে বেশি সুবিধা হবে না’
শ্রমিক নেতাদের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা শ্রমিক নেতা সেজে বিদেশিদের কাছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নালিশ করেন, তারা মনে রাখবেন যতদিন ক্ষমতায় আছি, বিদেশে নালিশ করে তাদের বেশি সুবিধা হবে না।
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধুর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে মহান মে দিবস উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু ব্যক্তি আছেন, তারা নেতা সেজে বসে আছেন। একটি টিকিটের জন্য কিছু হলেই তারা বিদেশিদের কাছে নালিশ করেন। তাদের বলছি, আমি যতদিন ক্ষমতায় আছি, বাইরে নালিশ করে বেশি সুবিধা হবে না।’
শ্রমিক নেতাদের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, কিছু কিছু শ্রমিক নেতা সেজে শ্রমিকদের ওপর খরবদারি করেন। কোনও কিছু হলেই বিদেশিদের কাছে গিয়ে নালিশ করেন। দেশের বদনামটা তুলে ধরেন। আর এই বদনাম করতে গিয়ে হয়তো একখানা টিকিট বিনা পয়সায় পান। বিদেশে থাকার একটু সুযোগ পান। একটু যেতে পারেন। সামান্য সুযোগের জন্য দেশের বদনামটা বাইরে গিয়ে করাটা নিজের দেশের জন্য যে কত ক্ষতিকর, সেটা তাদের অনেকেই বুঝতে পারেন না। এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে দুর্ভাগ্যের বিষয়।’
দেশের প্রতি ভালবাসা ও দেশপ্রেম থাকতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশকে গড়ে তুলতে চাই। দেশের মেহনতি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা আমাদের সরকারের লক্ষ্য। বঙ্গবন্ধু দেশের সব শিল্পকারখানা জাতীয়করণ করেছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার রাজনীতি হলো, এদেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জন্য। আমি তেল মাথায় তেল দিতে আসিনি। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এসেছি। শিল্প প্রতিষ্ঠানের শান্তি রক্ষার জন্য আমরা কাজ করছি। শ্রমজীবী মানুষের উন্নয়নে কাজ করছি। তাদের জন্য তহবিল গঠন করা হয়েছে। বন্ধ কলকারখানা আমরা চালু করছি।’
তিনি বলেন, মালিক-শ্রমিকদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। অনেক আন্তর্জাতিক চাপ আছে। বাইরে থেকে কেউ উসকে দিলে সেখানে তাণ্ডব শুরু হয়ে গেল এমন ঘটনা যেন না ঘটে। সেই ব্যাপারে আমি সবাইকে সতর্ক করে দিচ্ছি। আমি বলব, নিজের চাকরি ও কাজের ক্ষেত্র যেন কোনোমতেই ধ্বংস না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি শ্রমজীবীদের বলব, যে কারখানা আপনার রোজগারের ব্যবস্থা করে। আপনার ভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করে। সেই কারখানা যেন ঠিকমতো চলে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। সেখানে যেন কোনও অশান্তি সৃষ্টি না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে অনুরোধ করবো। একটা ভরসা রাখবেন, আপনাদের কোনও অসুবিধা হলে আমি তো আছি। আমি নিজের ভাগ্য গড়তে আসিনি। আপনাদের ভাগ্য গড়তে এসেছি। আপনাদের কোনো সমস্যা হলে আমি দেখবো।
মালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মালিকদের প্রতি আমার অনুরোধ, যে শ্রমিকরা শ্রম দিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আপনার জন্য উৎপাদন করেন। আপনি ব্যবসা করেন। আপনি ও আপনার পরিবার ভালো থাকে সেই শ্রমজীবী মানুষের প্রতিও আপনাদের আন্তরিক হতে হবে। তাদের প্রতি কর্তব্যে কোনও ত্রুটি না হয় তা দেখতে হবে।
শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নিহত শ্রমিকদের পরিবার, আহত শ্রমিক ও শ্রমিকদের মেধাবী সন্তানদের মাঝে চেক বিতরণ করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন