যমুনার থাবায় ঘর হারানোর আশঙ্কায় লক্ষাধিক মানুষ

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাছপালা, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ জনপদ। তাই আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে এই এলাকার নদী পাড়ের মানুষদের। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার দাবি, ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রামের বাসিন্দা চায়না বেগম। স্বামীহারা এই নারী ৩ সন্তান নিয়ে নদীর তীরে ছোট ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করেন। পর পর চারবার আগ্রাসী যমুনায় সব হারিয়ে নদীর তীরে ঘর বাঁধেন। কিন্তু আবারো ভাঙনের নির্মম শিকার হয়েছে সে। সবকিছু হারিয়ে এখন দিশেহারা সে।

ভাঙনে তার মত ভিটেহারা হয়েছে বাণগ্রাম, আরকান্দি, বাওইখোলা, পাকড়তলা, হাটপাচিলসহ ৮টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। প্রতিদিন গাছপালা, ফসলি জমিসহ বিস্তীর্ণ জনপদ ভাঙনে বিলীন হচ্ছে। ইতোমধ্যে নদীতে হারিয়ে গেছে ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই আতঙ্কে এখন নির্ঘুম রাত কাটছে এসব এলাকার মানুষদের।

এলাকাবাসীর একজন বলেন, প্রায় ২৫ থেকে ৩০ বিঘা জায়গা ছিল। ধান হয়েছিল, কিনতে কাটতে পারিনি। চলে গেছে নদীতে।

এলাকাবাসী বলছেন, ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড যে কাজ শুরু করেছে তা ভাঙন কবলিত সবকটি গ্রামে দ্রুত শুরু করা হোক।

এলাকাবাসী আরেকজন বলেন, আমাদের বাউলখালির পাচিল পর্যন্ত যেন দ্রুত কাজ শেষ করে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের এই কর্মকর্তা জানালেন, ভাঙন প্রতিরোধে জরুরিভিত্তিতে বাণগ্রামে ৫শ মিটার এলাকায় কাজ চলছে, বরাদ্দ পেলে পুরো এলাকায় স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটা মিনিস্টারিতে দাখিল করা হয়েছে। এখন পরিকল্পনা কমিশনে আছে। বাস্তবায়ন হলেই কাজ শুরু করবো।

ভাঙন অব্যাহত থাকলে বাঁধের অভ্যন্তরে থাকা খোকশাবাড়ি, শিবপুর, গুপিনাথপুর, রুপসিসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ভিটেহারা হবে বলে দাবি এলাকাবাসীর।