যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, মসজিদ,ঘরবাড়ি,তাঁত কারখানা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে

যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এবার বিলীন হল ঐতিহ্যবাহী তারকা মসজিদ। সোমবার (১৩ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানা সদরের ব্রাহ্মণগ্রামের এই নান্দনিক মসজিদটি নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়া গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩৫টি বসতভিটা চলে যায় যমুনার গর্ভে। চোখের সামনে নামাজের ঘর বিলীন হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছে এলাকাবাসী। তারা অভিযোগ করেছেন, ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্টরা সঠিক সময়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। তবে পাউবো সূত্র বলছে ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, সোমবার ভোর থেকে হঠাৎ করে যমুনা নদীতে ঘূর্ণ্যাবর্ত্যরে সৃষ্টি হয়। দেখতে দেখতে নদী পাড়ে শুরু হয় ভাঙন। বিলীন হয়ে যায় তারকা জামে মসজিদের পূর্বাংশের প্রধান ফটক। এছাড়া মসজিদের বারান্দাসহ অর্ধেকের বেশি। এতে মূহুর্তের মধ্যে নদী পাড়ে আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়। মসজিদের পাশে প্রায় ৪৫ মিটার এলাকায় এখন ভাঙন চলছে। তবে এখনও ভাঙন ঠেকাতে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি পাউবো বলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী আক্ষেপ করেছেন।

তারকা জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ জহুরুল ইসলাম জানান, (সোমবার) ফজরের নামাজ পড়েছি। হঠাৎ করে ভোর বেলা থেকে ভাঙনে বিলীন হয়ে গেল এলাকার ঐতিহ্যবাহী তারকা জামে মসজিদ। এতে ব্রাহ্মণগ্রামের সাধারণ মুসুল্লীদের হৃদয়ে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ হয়েছে। নদী পাড়ে প্রায় বেশ কয়েক বছর ধরে মসজিদটি দেখার জন্য বহু দর্শণার্থী নিয়মিত আসতো। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

এদিকে এনায়েতপুর খুকনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ মিয়া জানান, ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত নদীর তীর সংরক্ষণে সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন ও কাজ শুরু হয়েছে। তারপরও কেন এই ভাঙন। কাজের অগ্রগতি ও সঠিক তদারকির অভাবেই বারবার নদী পাড়ে ভাঙন। তারকা মসজিদসহ ব্রাহ্মণগ্রামের প্রায় অর্ধশত বসতভিটা নদীতে চলে গেছে। এলাকা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, চৌহালী উপজেলার যমুনা তীরবর্তী এলাকার ভাঙন আছে। তবে যেসব এলকায় বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে সেই এলাকায় ভাঙন ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভাঙনরোধে ৪০ হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। তিনি আরও জানান চৌহালী নদী ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য ৪৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে এটি পাশ হলেই আগামী শুষ্ক মৌসুমে ভাঙনরোধে কাজ করা হবে।