যমুনা নদীতে অবৈধ বালি উত্তোলনের দায়ে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার স্থল ইউনিয়নের কোচ গ্রামে যমুনা নদী থেকে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বালি দস্যুরা বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে বিক্রি করলে শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ গ্রামের লোকজন মসজিদে মাইকিং করে শত শত লোক জড়ো করে বালি ব্যবসায়ীদের ধাওয়া করে এনে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন।
খবর পেয়ে এনায়েতপুর থানা ও চৌহালী নৌপুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই বাল্কহেডসহ বালি দস্যুকে আটক করে। পরে চৌহালী নৌ-পুলিশ থানায় নিয়ে যান। আটককৃতরা হলেন, টাঙ্গাইল জেলার ভূঁয়াপুর উপজেলার সিরাজকান্দি গ্রামের আকবর হোসেনের ছেলে বেল্লাল হোসেন (২৬) ও একই উপজেলার সাড়িকাটা গ্রামের বাদশা শেখের ছেলে আমান আলী শেখ (৫৫)।
এরপর আটক ২জনকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করে বাল্কহেডসহ ছেড়ে দেয়া হয়। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান।
এ বিষয়ে চৌহালী নৌ-পুলিশ থানার ইনচার্জ এসআই ফারুক হোসেন বলেন, চৌহালী উপজেলার স্থল ইউনিয়নের কোচগ্রামের যমুনা নদীর চর থেকে বৃহস্পতিবার সকালে বালি দস্যুরা বাংলা ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন করে বিক্রির সময় পাশের ব্রাহ্মণগ্রামের লোক তাদের ধাওয়া করে ব্রাহ্মণগ্রামে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে চৌহালি নৌ-পুলিশের একটি টিম আটক করেন বালিদস্যুদের।
বেল্লাল হোসেন ও একই উপজেলার আমান আলী শেখসহ বাল্কহেড দু’টি চৌহালি নেয়ার পর ভ্রাম্যমান আদালতে হাজির করা হয়। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব হাসান তাদের প্রতিজনকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেন।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রামের আবুল ব্যাপারী, এলাহী ফকির, রেমানী সরকার, শাহজাহান ব্যাপারী ও নুর মোহাম্মদ বলেন, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোরশেদ আলম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ফজলু ব্যাপারী, সদস্য জয়নাল সরকার, খুকনি ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য হালিম সরকার, খাঁজা ইউনুছ আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্লিনার সুপার ভাইজার হাসমত আলী অবৈধ ভাবে শাহজাদপুর উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি ও চৌহালি উপজেলার কোচগ্রামের যমুনা নদীর চর থেকে বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালি কেটে বাল্ক হেডের সাহায্যে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ ও প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করায় গ্রামবাসি অতিষ্ঠ হয়ে এদিন সকালে ২ বাল্ক হেডসহ দুই বালি দস্যুকে আটক করে। খবর পেয়ে চৌহালি নৌপুলিশ তাদের নামমাত্র জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছে। এটা উচিত হয়নি, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে এই বালি উত্তোলনের সাথে জড়িতদের আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি। তারা আরও জানান, বালি দস্যুরা চৌহালি উপজেলার স্থল ইউনিয়নের কোচগ্রামের যমুনা নদীর চর থেকে বালি কাটলেও নৌ-পুলিশ বাল্কহেড ও দুই বালি দস্যুকে গ্রেফতার করেছে শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে।
বালি দস্যুদের রক্ষার কৌশল হিসাবে কোচগ্রাম থেকে আটক দেখিয়ে নৌপুলিশ ও প্রশাসন ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে দুই কর্মচারিকে জরিমানা করে ছেড়ে দিয়েছে। মূল বালি দস্যুদের রক্ষা করেছে। তারা এঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ফজলু ব্যাপারী বলেন, এ বালি কাটার সাথে আমরা কেউ জড়িত নই। এলাকাবাসি ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আমাদের নাম বলেছে। তাদের দেয়া তথ্য সত্য নয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন