যশোরের চাকলায় কলারোয়ার কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের চাকলায় রাকিব গাজী (১৮) নামের এক কলেজ ছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার হয়েছে।
এসময় তার ঘর থেকে তিন পৃষ্ঠার সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়।
সোমবার (৩ মে) দুপুরে মনিরামপুরের রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ রাজগঞ্জের মশ্বিমনগর ইউনিয়নের চাকলা গ্রামের মাঠপাড়া থেকে এ মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন।
রাকিব চাকলা গ্রামের মাঠপাড়ার আবু মুসা গাজীর ছেলে। সে কলারোয়ার ছলিমপুরের হাজী নাসির উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, ‘রাকিবের মরদেহে অদূরেই সুইসাইড নোট ছিল। তাতে উল্লেখ রয়েছে ‘অ্যাপাচি’ মোটরসাইকেল কিনে না দেওয়ায় কষ্টে রাকিব আত্মহত্যা করেছে। সে তার লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া বাড়ির উঠানে দাফনের কথা উল্লেখ করেছে নোটে।’
তারা আরো জানায়, ‘রাকিব যেখানে ঝুলছিল সেই আড়ার উচ্চতা খাট থেকে তিন ফুট উঁচু হবে। এত কম উচ্চতার মধ্যে তার মৃত্যু মানতে পারছেন না অনেকে। ফলে তার মৃত্যু আত্মহত্যা না পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে প্রতিবেশীসহ রাকিবের সহপাঠিদের। সুইসাইড নোট নিয়েও সন্দেহ তাদের।’
সোহান নামে রাকিবের এক সহপাঠী বলেন, ‘রাকিব ঘুমের বড়ি খেতো। সে অ্যাপাচি মোটরসাইকেল কিনতে চাইছিল। এরজন্য রাকিব মরতে পারে না।’
স্থানীয়রা জানান, ‘ঘরে রাকিবের সৎ মা। সাত বছর বয়সে তার মা লিলি বেগম তাকে ও লাবনী নামে এক মেয়েকে রেখে চলে যান।’
রাকিবের সৎ মা রেশমা বেগম জানান, ‘মোটরসাইকেল না কিনে দেওয়ায় রোববার রাতে ঘরের আড়ার সাথে মাফলার পেঁচিয়ে রাকিব আত্মহত্যা করেছে। সোমবার সকাল সাতটার দিকে আমরা তাকে ঝুলে থাকতে দেখেছি।’
রাকিবের মা লিলি বেগমের দাবি, ‘সৎ মা রেশমা বেগম ও পিতা আবু মুসা রাকিবকে মেরে লাশ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে।’
তবে রাকিবের আপন বোন লাবনী জানান, ‘তার ভাই ঘুমের ওষুধ সেবন করতো। সিগারেট টানতো। মোটরসাইকেল না পেয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।’
লাবনী বলেন, ‘ছোট্টকালে মা আমাদের দুই ভাই বোনকে রেখে চলে যান। এরপর থেকে সৎ মা আমাদের আপন সন্তানের মত মানুষ করেছেন। আমার মা এতদিন খবর নেননি। আজ ভাইয়ার মরার খবর শুনে এসেছেন। মা যা বলছেন সত্যি না। তিনি নতুন করে সমস্যা বাধাতে চাচ্ছেন।’
রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপ-পরিদর্শক লিটন বলেন, ‘ঘুমের বড়ি খেয়ে রাকিব আত্মহত্যা করেছে, না তাকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, তা প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না। প্রকৃত কারণ জানতে লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কাগজে লেখা কিছু পেয়েছি। সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
রাজগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর শাহাজাহান আলম বলেন, ‘রাকিবের মা যা বলছেন সেটা আবেগ। আমরা লাশ মর্গে পাঠিয়েছি।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন