যশোরের ঝিকরগাছায় সাংবাদিক পরিচয়ে প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের ৭৫ টাকার বীজ ১২’শ টাকায় বিক্রি

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় সাবেক সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে পশু চিকিৎসক মুক্তার আলী চালাচ্ছে রাম রাজত্ব। ক্রমাগতই ঘটনাটি ঘটে চলছে ৬নং ঝিকরগাছা ইউনিয়ন এলাকায় সরকার কতৃক নির্ধারিত ফি ৭৫টাকা এর বাহিরে গিয়ে তিনি ১২শত টাকা করে বিক্রয় করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লুটে নিচ্ছে হাজার-হাজার টাকা। তিনি পদ্মপুকুর গ্রামের মৃত. নজরুল ইসলামের ছেলে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রাণি সম্পদ-২ অধি শাখার বিগত ০৭/০৬/২০২৩ ইং তারিখে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ সচিব মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত ৩৩.০০.০০০০.১১৮.১৫.০০৩.২১-২১৫/১(৭)নং স্মারকের প্রজ্ঞাপনে সরকারি ভাবে কৃত্রিম প্রজনন চার্জ তরল সিমেন দ্বারা কৃত্রিম প্রজনন ফি ৫০টাকা, হিমায়িত সিমেন দ্বারা কৃত্রিম প্রজনন ফি ৭৫টাকা নিধারণ এবং উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটোরিনারি হাসপাতালের বিভিন্ন সেবার মূল্য তালিকায় উল্লেখিত সরকারি ফি সহ বেসরকারি সংস্থার ফি হিমায়িত ১৫০টাকা, এর সাথে সরকারি ভাবে ৪০টাকা ও বেসরকারি ভাবে ৫০টাকা কর্মীর পারিশ্রমিক এবং সরকারি ও বেসরকারি উভায়ের দূরত্ব অনুযায়ী যাতায়াত খরচ প্রতি কি. মি. ২০টাকা (সর্বোচ্চ ১০কি. মি.) নির্ধারণ করা রয়েছে।
সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে বা সরকারি নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে উপজেলার ঝিকরগাছা ইউনিয়ন এলাকায় মুক্তার আলী ২০বছর যাবৎ ঢাকাতে থেকে ৭বছর যাবৎ একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও ২বছর যাবৎ আর একটি চ্যানেলে সংবাদিকতা করে অবশেষে ৫বছর যাবৎ এলাকায় এসে হয়েছেন পশু চিকিৎসক।
এছাড়াও তিনি মাস খানিক আগে থেকে হয়েছেন এসসিআই কোম্পানীর বীজের ডিলার। তিনি উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটোরিনারি হাসপাতালের নির্ধারিত ১৭জন কর্মীর মধ্যে না থাকলেও সরকার কতৃক নির্ধারিত ফি এর বাহিরে গিয়ে অসহায় মানুষকে বোকা বানিয়ে লুটে নিচ্ছে হাজার-হাজার টাকা।
সম্প্রতি সময়ে তিনি বিগত ২৪/০৪/২০২৫ইং তারিখে ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে রয়েল/ রাফিজা নামের এক মালিকের একটি গাভির এইচএফ-১০০% ওস্কাভ এর কৃত্রিম প্রজনন বা বীজ সকাল ও বিকালে ২ডোজ দিয়ে ২বারে সর্বমোট ২হাজর ৪শত টাকা নিয়েছেন।
তবে এই বিষয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটোরিনারি হাসপাতালের যোগযোগ করা হলে কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে বেসরকারি ভাবে নিধারিত ফি ১৫০ এর বাহিরে ৫০টাকা কর্মীর পারিশ্রমিক ও দূরত্ব অনুযায়ী যাতায়াত খরচ প্রতি কি. মি. ২০টাকা হিসেবে ৫ কি. মি. হলে ১০০/- নিতে পারে তার বাহিরে নেওয়ার সুযোগ নাই।
উল্লেখিত ঘটনার বিষযে বা উপজেলা ব্যাপী নামে-বেনামে গড়ে ওঠা প্রাণি চিকিৎসকদের সরকারি নিয়মনীতির মধ্যে আনতে প্রশাসনের পক্ষ হতে কঠোর হস্তে দমনের দাবী জানিয়েছেন এলাকার সচেতন মহল।
ভুক্তোভোগী রয়েল/ রাফিজার পরিবারে নিকট জানতে চাওয়া হলে তারা বলেন, আমাদের বাড়িতে তিনি সকালে ও বিকালে এসে ২ ডোজ কৃত্রিম প্রজনন বা বীজ দিয়ে প্রতিবার ১২শ টাকা করে ২বারে ২৪শ টাকা নিয়েছেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সাবেক সাংবাদিক পরিচয়ধারী পশু চিকিৎস মুক্তার আলী বলেন, এগুলো কি আপনার জানার এক্তিয়ার আছে।
আমাদের এই সব তথ্য নিবে পশু অফিস। ওখানে এক ম্যাডাম আছে। আপনি কতটুকু কি করতে পারেন সব আমার জানা আছে। আমি এসসিআই কোম্পানীর বীজের ডিলার। ঝিকরগাছার বুকে আমার আরও ২৭জন কর্মী আছে। বীজ দেওয়ার রেট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বীজের রেট সম্পর্কে জানতে হলে হাসপাতালে যাবেন এবং ওখানে রেটের নীতিমালা আছে ওটা তুললেই আপনি জানতে পারবেন।
সরকারি বীজের দাম ৭৫টাকা আর একটা আছে ৮৫টাকা। আর বেসরকারি ভাবে ১টা বীজ কেনা পড়ে ২শ, ৩শ ৫০ ও ৯শ টাকা। আমরা ১০টাকা লাভে কর্মীদের কাছে পৌছে দি। বীজ কত বার দেওয়া লাগে সম্পর্কে তিনি বলেন, একবার। দুবার দিলে তো ডবল হয়ে যাবে। ২বার দেওয়ার কোন অপশন নেই।
তার বিরুদ্ধে ২বারে ২হাজর ৪শত টাকার নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি তথ্য অস্বীকার করে বলেন, আমার জীবনে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি। যদিও নিয়ে থাকি তাহলে আমি খারপ কিছু করেনি। আপনি প্রমাণ করতে পাড়লে আমি তাদের ১০গুন ফেরৎ দিবো!
উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসার ডা. মাসুমা আখতার বলেন, তিনি এতো টাকা কি ভাবে নিলো। সে যে কোম্পানীর হোক সরকারের নিধারিত ফি এর বাহিরে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার সুযোগ নেই। রেটের বাহিরে তিনি কেন এই রেট নিলো অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন