যশোরের বেনাপোলে রেলপথে আমদানি কমলো, নিষেধাজ্ঞা ও অবকাঠামো দুর্বলতার দায়ে বাণিজ্য ধাক্কা

দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে রেলপথে আমদানি বাণিজ্যে বড় ধরনের ধস নেমেছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেলপথে আমদানি হয়েছে মাত্র ১২ হাজার মেট্রিক টন পণ্য, যেখানে আগের বছর এই পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার টন। অর্থাৎ এক বছরে আমদানিতে ২৯ হাজার টনের ঘাটতি হয়েছে।

এই পতনের জন্য আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা দায়ী করছেন ভারতের ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা এবং বেনাপোল রেলস্টেশনের দুর্বল অবকাঠামোকে। যদিও রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত পণ্য খালাসে সহায়তা করতে স্টেশনে কার্গো ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীরা জানান, রেল ও সড়কপথে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের বড় অংশটি হয় বেনাপোল দিয়ে। তবে গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে ভারত সরকার একাধিক পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে গুঁড়ো দুধ, সুতা, প্রিন্ট পেপার, পেপার বোর্ড, মাছ, তামাকসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের আমদানি বন্ধ রয়েছে। একইভাবে রপ্তানি বন্ধ রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য, কাঠের আসবাবপত্র ও ফল।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মোহসিন মিলন বলেন, “নিষেধাজ্ঞার কারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভারতীয় সীমান্তে প্রতিদিন ট্রাক আটকে থাকছে। সরকারিভাবে উদ্যোগ না নিলে সংকট আরও বাড়বে।”

এদিকে রেলওয়ের দুর্বল অবকাঠামোও এক বড় কারণ বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, “রেলস্টেশনে এখনও ইয়ার্ড নির্মিত হয়নি। ফলে পণ্য খালাস করতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। রপ্তানির অনুমতি দুই বছর আগে মিললেও বাস্তবায়ন হয়নি।”

তবে বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. সাইদুজ্জামান জানিয়েছেন, “রেলস্টেশনে কার্গো ইয়ার্ড নির্মাণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি বাণিজ্য চালুর বিষয়ে দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে।”

ব্যবসায়ীরা বলছেন, রেলপথে বাণিজ্য চালু থাকলে পরিবহন খরচ কমত এবং বন্দরে চাপ হ্রাস পেত। বর্তমান সংকট কাটিয়ে রেলপথে আমদানি-রপ্তানির পথ উন্মুক্ত করতে দুই দেশের সরকারের সহযোগিতা এখন সবচেয়ে প্রয়োজনীয়।