যশোরের মণিরামপুরে ৪০ দিনের কর্মসূচি কাজ ৩৭ দিনে শেষ, শ্রমিকের তালিকায় গাড়ি মালিকের নাম

নানা অনিয়মের মধ্য দিয়েই শেষ হয়েছে যশোরের মণিরামপুরে অতিদরিদ্রদের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রথম দফার কাজ। ৪০ দিনের কর্মসূচি হলেও কাজ হয়েছে ৩৭ দিন। তার ওপর অতিদরিদ্র ব্যক্তির পরিবর্তে গাড়িবাড়ির মালিকের নামও রয়েছে শ্রমিকের তালিকায়। আবার অনেক ইউপি মেম্বরের বিরুদ্ধে তালিকায় ভূয়া নাম দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এ ভাবেই প্রথম দফার কাজ শেষ হয়েছে গত ৩০ মার্চ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়- সরকার মণিরামপুর উপজেলায় অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থান করতে চলতি বছরের প্রথম দফায় ৪০ দিনের কর্মসূচির আওতায় ৪৬ টি প্রকল্প গ্রহন করেন। আর এসব প্রকল্পে জনপ্রতি দৈনিক চার’শ টাকা মুজুরিতে মোট এক হাজার ৯৫৬ জন শ্রমিকের কাজে অংশ নেওয়ার কথা। এ প্রকল্পের কাজসমুহ দেখভালের দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস (পিআইও)। গত ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ৩০ মার্চ-২০২২ কাজ শেষ হবার কথা। কিন্তু ৫ ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে কাজ শুরু হয় ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে। অর্থাৎ ৪০ দিনের পরিবর্তে কাজ হয়েছে ৩৭ দিন। ফলে শ্রমিকরা তিন দিনের মুজুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অন্যদিকে অতিদরিদ্রদের জন্য এ প্রকল্প হলেও অভিযোগ রয়েছে অনেক স্বচ্ছল ব্যক্তির নামও রয়েছে শ্রমিকের তালিকায়। ফলে তারা কাজে অংশ না নিলেও তাদের মোবাইল একাউন্টে ঠিকই টাকা চলে আসছে।

খৌঁজ খবর নিয়ে জানাযায়- উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে সোহাগ হোসেনের রয়েছে কয়েকটি গাড়ি। অথচ সোহাগের নাম রয়েছে শ্রমিকের তালিকায়। সোহাগ একদিনও কাজে অংশ নেননি। অথচ সোহাগের মোবাইল একাউন্টে ২০ দিনের মুজুরি বাবদ আট হাজার টাকা এসেছে। তবে মেম্বর সিদ্দিকুর রহমান জানান- ছেলের নাম থাকলেও কাজে অংশ নেন তিনি। হরিদাসকাটি ইউপিতে শ্রমিকের তালিকায় রয়েছে গৌরাঙ্গ নামে এক ব্যবসায়ীর। গৌরাঙ্গও কাজে একদিনও অংশ নেননি। অভিযোগ রয়েছে গৌরঙ্গের নামটি তালিকাভূক্ত করেছেন প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত ওয়ার্ড মেম্বর চন্দনা রানী। চন্দনা রানী জানান- গৌরঙ্গের পরিবর্তে অন্য একজন কাজ করেছেন। কে কাজ করেছেন তার নামটি জানাতে পারেননি চন্দনা রানী। ইতিমধ্যে এসব শ্রমিকরা প্রথম ধাপের ২০ দিনের টাকা উত্তোলন করেছেন। বাকী রয়েছে ১৭ দিনের। শ্রমিকের তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব পিআইও এসএম আবু আবদুল্লাহ বায়েজিদের মোবাইলফোনে একাধীকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে পিআইও অফিসের উপসহকারি প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার জানান- সিদ্দিক মেম্বরের ছেলে সোহাগের মোবাইল একাউন্টে পরবর্তি ১৭ দিনের মুজুরি না আসার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাকী অনিয়মের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেননা বলে দাবি করেন।