যশোরের মনিরামপুরে মানবাধিকার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালা

যশোরের মনিরামপুরে মানবাধিকার বিষয়ক দুইদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা রোববার শুরু হয়েছে। “নেটজ বাংলাদেশ” এর অর্থায়নে মনিরামপুর পৌর শহরের মুনলিট ক্যাফে অডিটরিয়ামে ‘রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ’ এর হোপ প্রকল্পের উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণটি আয়োজিত হয়।

মনিরামপুর সিএসও সভাপতি অধ্যাপক মোঃ আব্বাস উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক মোঃ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা সিএসও’র সভা প্রধান অনুপমা মিত্র। প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রিইব হোপ প্রকল্পের টেকনিক্যাল সমন্বয়কারী ভানু রানী।

“মানবাধিকার হলো প্রতিটি মানুষের সহজাত এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকার। এগুলো জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এর মধ্যে জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার, নির্যাতন থেকে মুক্তি এবং আইনের চোখে সমতা অন্যতম।”

প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য ছিল মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে এর গুরুত্ব তুলে ধরা। প্রশিক্ষণে মানবাধিকারের সংজ্ঞা, মৌলিক অধিকারের সঙ্গে এর পার্থক্য এবং দৈনন্দিন জীবনে মানবাধিকারের প্রয়োগ নিয়ে খুঁটিনাটি আলোচনা করা হয়।

প্রশিক্ষক ভানু রানী মানবাধিকারের সংজ্ঞা তুলে ধরে বলেন, “মানবাধিকার হলো প্রতিটি মানুষের সহজাত এবং অলঙ্ঘনীয় অধিকার। এগুলো জাতি, ধর্ম, বর্ণ বা লিঙ্গ নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্য প্রযোজ্য। এর মধ্যে জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার, নির্যাতন থেকে মুক্তি এবং আইনের চোখে সমতা অন্যতম।”

তিনি মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের মধ্যেকার পার্থক্যও সুস্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, “মৌলিক অধিকার নির্দিষ্ট কোনো দেশের সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত এবং আদালতে বলবৎযোগ্য, যেখানে মানবাধিকার একটি সার্বজনীন ধারণা যা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রযোজ্য। মানবাধিকার জন্মগত, কিন্তু মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত।”এই প্রশিক্ষণ থেকে হাতে-কলমে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হন।

এই ধরনের প্রশিক্ষণ সমাজে মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং সকলের জন্য একটি উন্নত ও ন্যায়সঙ্গত পরিবেশ তৈরি করতে সহায়ক হবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন।

মূলতঃ কর্র্মশালার উদ্দেশ্য হলো মানবাধিকারের মৌলিক ধারণা, আইন ও আন্তর্জাতিক সনদ সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা চিহ্নিত করা, প্রতিবেদন তৈরি করা এবং ভুক্তভোগীদের আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধি করা। বিভিন্ন মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী এবং সমাজকর্মীদের মধ্যে একটি কার্যকর নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, যাতে তারা একসঙ্গে কাজ করতে পারে। নাগরিকদের নিজেদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন করা এবং সমাজে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকা সম্পর্কে উৎসাহিত করা।

কর্মশালায় সাধারণত মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের সংবিধানের মৌলিক অধিকার, নারী ও শিশুর অধিকার, গণমাধ্যমের ভূমিকা এবং আইনি সহায়তা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।