যশোরের মনিরামপুর হাসপাতাল বেডেই কেটেছে যাদের ঈদ

আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে সোমবার (৩১ মার্চ) পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে যখন সবাই ব্যস্ত। ঠিক তখনই কিছু মানুষ, যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। উৎসবের দিনটি কাটাতে হয়েছে হাসপাতালে।
বেডেই শুয়ে থাকা মানুষগুলোর ছিল না ঈদ আনন্দ। গত রোববার (৩০ মার্চ) ও সোমবার (৩১ মার্চ) যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছিলেন ৪ শিশুসহ ১৯ জন। হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে ৬জন, পুরুষ ওয়ার্ডে ১১ জন ও কেবিনে ২ জন রোগী ছিলেন। ঈদের দিন বিকেলে হাসপাতাল ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
ঈদের দিন সকালে ভর্তি রোগীদের মধ্য ছিলেন উপজেলার ডাঙ্গামহিষদিয়া গ্রামের ১১ মাস বয়সী শিশু জোহান, মনিরামপুর গ্রামের আরাফাত (৪), হাকোবা গ্রামের ফাতেমা (২) ও খোজালীপুর গ্রামের নয় মাসের শিশু আরিয়ান। জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনুব বসু জানান, ঠান্ডা, জ্বর, কাশি ও ডাইরিয়া জনিত কারণে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে, শিশু সন্তানদের নিয়ে দু’চিন্তায় স্বজনরা। অন্যদিকে ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তারা। পান্না বেগম বলেন- ঈদের দিন সকালে জ্বর, পায়খানা ও বমি জনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হয় শিশু আরাফাতকে। ঈদের আনন্দের চেয়ে ছেলের সুস্থ হওয়াটা জরুরী।
ডলি বেগম বলেন- ডাইরিয়া জনিত কারণে জোহানকে হাসপাতালে ভর্তি আনা হয়। যে কারনে ঈদের দিনটা হাসপাতালেই কাটাতে হয়েছে স্বপরিবারকে। তবে, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরাটা ঈদের আনন্দের মত ছিল।
এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি হন, উপজেলার বাহিরঘরিয়া গ্রামের রিজিয়া (৩৫) ও মাসনা গ্রামের ফিরোজা বেগম (৫৫), ঘুঘুরাইল গ্রামের এরশাদ আলী গাজী (৮৫), কামালপুরের হালিমা বেগম (৫৫), তাহেরপুর গ্রামের মুসতাক (৩৩), হাসান গাজী (৮৫), সুন্দলপুর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ (৫৬)।
সাইফুল ইসলাম নামে এক রোগীর স্বজন জানান- স্ব-পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে এবার ঈদ কাটান হলো না। হাসপাতালের বেড়ে শুয়ে তাদের ঈদের দিনটি কাটছে। তবে, দুপুরে হাসপাতাল থেকে বিরিয়ানি, খাসির মাংস ও দই খেতে দেওয়া হয়। শুধু মাসুম, এরশাদ নয়, হাসপাতালে ভর্তি হন ১৯ জন।
সেবা নিতে আনা রোগীদের ঈদ কাটাতে হয় হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। মুমূর্ষ ও জরুরি রোগীদের সেবায় ঈদের দিনও হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করেছেন চিকিৎসক, নার্স ও আয়ারা। ঈদে হাসপাতালে রোগী ও সেবাদানকারী কর্মীদের সময় কাটে সবচেয়ে করুণ ভাবে।
অনেকে ছুটিতে চলে যাওয়ায় যারা দায়িত্বে থাকেন, তাদের বাড়তি চাপ সামলাতে হয়। হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সুমিত্রা মন্ডল ও রিপা বিশ্বাস জানান- মানুষ যখন ধর্মীয়সহ বিভিন্ন উৎসব গুলোকে উপলক্ষ্য করে আনন্দ উদযাপন করে, তখনও রোগীদের সেবার জন্য আমরা সচেষ্টা।
ডিউটি শেষে পরিবারের সঙ্গে যতটুকু সময় কাটাতে পারি, তাতেই পরিবারের সদস্যরা সন্তুষ্ট থাকেন। জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসা অনুপ বসু জানান- হঠাৎ করে তীব্র গরমে হাইপার এসিডিটি (অতিমাত্রায় গ্যাসের সমস্যা) ও আরটিএ (সড়ক দূর্ঘটনা) জনিত কারণে ভর্তি হয়েছে অধিকাংশ রোগী। ঈদ উপলক্ষে এদিন রোগীদের বিশেষ খাবার দেওয়া হয়েছে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন