যশোরের রাজগঞ্জে অসহনীয় মাত্রায় শব্দদূষণ, কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না
যশোরের মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না শব্দদূষণ। শব্দ দূষণ অতিরিক্ত মাত্রায় ছাড়িয়েছে। দূষণরোধে সরকারী ভাবে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন স্কুল, কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীরা ও বয়স্করা।
শব্দদূষণজনিত স্বাস্থ্যঝুঁঁকিতে পড়ছে রাজগঞ্জবাসী। রাজগঞ্জে বিশেষ করে গাড়ীর হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার, অনিয়ন্ত্রিত যান চলাচল ও উচ্চ স্বরে মাইকিং এই দূষণের প্রধান কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন- শব্দদূষণ শিশু, অন্তঃসত্তা ও হৃদ্রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ।
যশোর, পুলেরহাট, রাজগঞ্জ, ত্রিমোহনী, খোরদো ও কুমিরা সড়কে ভারী যানবহন চলাচলের চাপ বেশি। এই সড়কের মাঝে রয়েছে প্রাচীন বাণিজ্যিক ও পর্যটন শহর রাজগঞ্জ। ভারী যানবহনগুলো রাজগঞ্জ বাজারের উপর আসলে উচ্চ শব্দে হাইড্রোলিক হর্ন ব্যবহার করে চালকেরা। এতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখিন হয় কোমলমতি শিক্ষার্থী ও বয়স্কদের।
শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুসারে নীরব এলাকায় উচ্চ শব্দে হাইড্রোলিক হর্ন বাজানো এবং মাইকিং করা নিষিদ্ধ করা হয়। এ বিধিমালা লঙ্ঘন করছে গাড়ী চালকেরা। স্থানীয়রা, এপ্রতিনিধিকে জানান- শব্দদূষণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআরটিএ ও পুলিশ প্রশাসন কাজ করলে উচ্চ শব্দে শব্দ দূষণ বন্ধ করা সম্ভব। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন- উচ্চমাত্রার শব্দ মানবদেহে রক্তচাপ ও হৃৎকম্পন বাড়িয়ে মত্যুঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি করতে পারে। এছাড়া শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া এবং বধির হওয়ার মতো অবস্থারও সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। শিশুরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে লেখাপড়ায়। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন- অনেক সময় শব্দদূষণের কারনে কানের টিস্যুগুলো আস্তে আস্তে বিকল হয়ে পড়ে।
এছাড়া মাত্রাতিরিক্ত শব্দ স্নায়ু দুর্বল করে, মাথা যন্ত্রণা, অস্থিরতা ও কর্মদক্ষতা কমিয়ে দিতে পারে। স্থানীয় হাইস্কুল শিক্ষক মোঃ মাসুদ কামাল বলেন- হাইড্রোলিক হর্ন, যানবাহনে মাত্রাতিরিক্ত শব্দ ও মাইকিং বন্ধে এখনই সমন্বিতভাবে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে রাজগঞ্জে শব্দদূষণ আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। শব্দদূষণ রোধে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সচেতনতাও বাড়াতে হবে।
স্থানীয় অভিভাবকেরা বলেন- শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে না আসলে বা বন্ধ না হলে (আমাদের সন্তান) স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীরা রাজগঞ্জ বাজারে অবস্থান নেবে। ঝাঁপা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য তাজু হোসেন, খালেদুর রহমান টিটো ও আব্দুর রাজ্জাক বলেন- শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সবাইকে সচেতন করা ছাড়া এই দূষণ রোধ সম্ভব না। পাশাপাশি প্রশাসনেরও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন