যশোরের রাজগঞ্জে আগুনে ছাঁই বিধবার শেষ সম্বল

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকায় আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে গেছে বিধবা মাজেদা বেগমের।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ-২০২২) ভোর রাতে তার ঘরে আগুন লাগে।

জাতীয় হেল্প লাইন ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। ততোক্ষণে আগুন সব কিছু ছাই করে দিয়েছে এ বিধবার।

মাজেদা বেগম উপজেলার রাজগঞ্জের ঝাঁপা ইউনিয়নের জোঁকা গ্রামের মৃত সমসের আলীর স্ত্রী। শোয়ার ঘর না থাকায় রান্না ঘরের এক কোনে থাকতেন তিনি। সেই আশ্রয়টুকু কেড়ে নিয়েছে আগুন।

গোয়াল ঘরের সাজাল (মশা তাড়ানোর আগুনের মশাল) থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। আগুন লেগে নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকা, ৬০টি মুরগী, দুইটি হাঁস, ৫০টি ডিম, হাঁড়ি পাতিল, গোয়ালের একমাত্র গরুটির দেহের অংশবিশেষ এমনকি খাবারের চাল পুড়ে গেছে তার। এতে অন্তত ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে এ অসহায় নারীর।

কদিন আগে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে খুঁটি আর টিন দিয়ে রান্না ও গোয়াল ঘর করেছিলেন মাজেদা বেগম। একটা মাত্র ছেলে দিনমজুরি করে খায়। নিজের সংসারে অভাব থাকায় খোঁজ নিতে পারেন না মায়ের। শোয়ার ঘর না থাকায় রান্না ঘরের এক কোনায় থাকতেন মাজেদা।

তিন বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ায় মাঠে দিনমজুরি শুরু করেন মাজেদা। তাতে কোন রকম কেটে যায় তার দিন।

মাঠের কাজের পাশাপাশি হাঁস মুরগী ও গরু পালন শুরু করেন মাজেদা। এদিন ভোরে লাগা আগুনে সব পুড়ে ছাই হয়েছে তার। সব হারিয়ে এখন নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তিনি।

মাজেদা বেগম বলেন- ভোর বেলায় আগুন দেখতে পাইছি। সব পুড়ে গেছে। কিচ্ছু নেই। দুপুরে খাবো সে চালও নেই ঘরে। গরুর গায় আগুন লাগলি দড়ি ছিড়ে ও পালাইছে। গরুটা এখনো খুঁজে পাইনি।

মণিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার প্রনব বিশ্বাস বলেন- ৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আমরা যেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। রান্না ঘরের সাজাল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুনে বিধবার সবকিছু পুড়ে গেছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছি।

রাজগঞ্জের ঝাঁপা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বলেন- আগুন লেগে বিধবা মাজেদার বড় ধরণের ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ও পরিষদের মাধ্যমে আমরা তাঁকে সাহায্য করার চেষ্টা করবো।