যশোরের শার্শার গাছিরা খেজুরের রস সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত

যশোরের শার্শায় রস সংগ্রহের জন্য খেজুরগাছ প্রস্তুতির ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা । এখন হেমন্তকাল। মাঠ থেকে আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে পুরোদমে। নতুন ধানের নতুন চালের মৌ মৌ গন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। এদিকে শীতের শিশির পড়া শুরু হয়েছে। সেই সাথে খেজুর গাছেও রস আসার সময়ও চলে এসেছে। সেজন্য খেজুর গাছের ডালপালা কেটে-ঝুরে ফেলে (গাছতুলা) ভাড় লাগানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

হেমন্ত, শীত ও বসন্তকালে খেজুরগাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। খেজুর রস সংগ্রহ করার জন্য আগেই খেজুরগাছ ঝুরার কাজ করে ভাড় লাগানোর জন্য প্রস্তুত করতে হয়। সেজন্য দরকার হয় গাছিদের। যারা গাছ ঝুরার কাজ করে তাদেরকে আঞ্চলিক ভাষায় গাছিয়া ও গাছি বলা হয়ে থাকে।

শার্শা উপজেলায় খেজুরগাছ ঝুরার কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। পাশাপাশি কিছু কিছু খেজুর গাছের রস সংগ্রহের জন্য ভাড় লাগানো হলেও এখন বেশি রস পাওয়া যাচ্ছে না। শীত বাড়লেই বেশি রস পাওয়া যাবে। শীতকালে খেজুর রস খেতে অনেক মজা লাগে। খেজুর রস দিয়ে পিঠা-পুলি, রসের ক্ষীর ও পায়েস’সহ নানা রকমের রসালো খাবার তৈরি করা হয়। যা খেতে খুব সুস্বাদু ও মজাদায়ক।

শার্শা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ও হাট-বাজারে খেজুরের পাটালি ও গুড়েরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই খেজুর রস ও গুড় অনেকটা জনপ্রিয়। এই উপজেলায় বিপুল পরিমাণ খেজুরগাছ রয়েছে। যা থেকে প্রচুর পরিমাণ খেজুর রস ও গুড় পাওয়া যায়।

শার্শা উপজেলার কায়বা,বাগআঁচড়া, গোগা ইউনিয়ন ঘুরে বামনিয়া গ্রামের আব্দুর রশিদ মল্লিকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি ৪০ (চল্লিশ) বছর ধরে খেজুর রস সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত আছি। এ বছর আমি ২০০ (দুইশত) খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছের ডালপালা কেটে-ঝুরে ভাড় লাগানোর জন্য প্রস্তুত করেছি। তিনি আরও বলেন,আর কয়েকদিন পর থেকে খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করা হবে। খেজুর রস ও গুড় সবারই প্রিয়, আর এই খেজুরের রস এবং গুড়ের কারণেই আমাদের জেলাকে যশোরের জজ খেজুরের রস নামে উপাধি দিয়েছে। কিন্তু এটা যেন বিলুপ্তির পথে তাই আমাদের এই উপাধিটা যাতে ধরে রাখতে পারি তার দেখভাল করতে হবে।

এ বিষয়ে শার্শা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বছর মোট খেজুর গাছের সংখ্যা ৪৭,৭৯০ পিস, এর ভেতর ৫-১০ বছরের গাছ আছে ৮,৭১০ পিস, ৫ বছরের নিচের গাছ আছে ৪,২৪০ পিস, এবং পূর্ণ বয়স্ক গাছ ( রস আহরণ কারী) গাছের সংখ্যা এ বছর ৩৪,৮৪০ পিস এবং মোট রস সংগ্রহকারী ( গাছির) সংখ্যা আছে ৫৮৫ জন।