‘যারা মানুষ পোড়ানো খেলায় ব্যস্ত তাদের জন্য এত মায়াকান্না কেন’

বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা মানুষ পোড়ানো খেলায় ব্যস্ত তাদের জন্য এত মায়াকান্না কেন।’ বুধবার বিকেল ৪টায় গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ প্রশ্ন করেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ নিয়ে কতটা আশাবাদী?’

উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়। কোন দল নির্বাচনে আসবে কে আসবে না এটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। এতে আমাদের কিছু করার নেই।

তিনি বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমি তাদের (বিএনপি) নির্বাচনে আসার আহ্বান জানাই। তৎকালীন বিরোধী দল আমার আহ্বানে সাড়া দেয়নি। বাকিদের নিয়ে নির্বাচন করেছি। কিন্তু নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তারা (বিএনপি) নির্বাচন ঠেকানোর কাজ করেছে। তারা ৩৯০০ মানুষ পুড়িয়েছে। যারা মানুষকে মানুষ মনে করে না তাদের জন্য মায়াকান্না কেন? যারা আগুনে পুড়েছে তাদের কখনো খোঁজ নিয়েছেন? যারা আগুনে পুড়ে কর্মক্ষমতা হারিয়েছে তাদের পরিবার কীভাবে চলছে খোঁজ নিয়েছেন?

‘যারা মানুষ পোড়ানোর খেলা খেলে তাদের জন্য এত মায়াকান্না কেন? যারা সামান্য এতিমের টাকার লোভ সামলাতে পারে না তাদের জন্য এত কান্না কেন? এরা কীভাবে স্বপ্ন দেখে ক্ষমতায় আসার? কীভাবে দেশ চালাবে তারা?’- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

২০০৮ সালের ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিকল্পনা নিয়ে এসেছিলেন। এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে কি থাকছে? উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার আগামী ৮১ বছরের ডেল্টা প্ল্যান করেছি। ২১০০ সালে অর্থাৎ আগামী শতাব্দীতে বাংলাদেশ কেমন হবে সেই পরিকল্পনা করে ফেলেছি।’

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে যোগদানের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রে সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদ সম্মেলনে এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বেশ কিছু প্রাপ্তিসহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক ও তার ফলাফল বিস্তারিত তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডসের রানি ম্যাক্সিমা, এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট ক্রেস্টি কালজুলেইদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেইওর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া সংবর্ধনা সভায়ও যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট, সাইবার নিরাপত্তা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষা এবং বৈশ্বিক মাদকদ্রব্য সমস্যা নিয়ে কয়েকটি উচ্চপর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) প্রদত্ত সম্মানজনক ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করেন। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয়দানের মাধ্যমে মানবিকতার উদাহরণ সৃষ্টি করায় তাকে এই পদকে ভূষিত করা হয়। পাশাপাশি দূরদৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার জন্য গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন-এর পরিচালনা পর্ষদ তাকে ‘২০১৮ স্পেশাল রিকগনাইজেশন ফর আউটস্ট্যান্ডিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করে।