যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় চরমপন্থা সৃষ্টির আশঙ্কা বাংলাদেশের
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী করার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা সংশয় প্রকাশ করছি, জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী এবং তেল আবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর সংক্রান্ত যুক্তরাষ্টের সাম্প্রতিক ঘোষণার ফলে মুসলিম বিশ্বে আরো বিক্ষোভের আগুন জ্বলতে পারে এবং সংঘাতপূর্ণ মধ্যপ্রাচ্যে নতুনভাবে উত্তেজনা, শত্রুতা ও সহিংস চরমপন্থার সৃষ্টি হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ পরিণতি ও হুমকি ডেকে আনবে।’
মাসুদ বিন মোমেন আজ শুক্রবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার রক্ষা’ সংক্রান্ত কমিটিতে বক্তব্য প্রদানকালে এ কথা বলেন।
ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্থায়ী প্রতিনিধি যুক্তরাষ্ট্রের এ ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘এর ফলে পবিত্র নগরী পূর্ব জেরুজালেম ইসরায়েলের দখলে চলে যাবে, যা এর ঐতিহাসিক ও আইনগত মর্যাদা, জনমিতিক কাঠামো এবং পূর্ব জেরুজালেমকে ঘিরে আবহমান আরব-ইসলামিক পরম্পরার পরিবর্তন ঘটাতে পারে।’
রাষ্ট্রদূত মাসুদ ১৯৬৭ সালে নির্ধারিত সীমানার ভিত্তিতে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, পূর্ব জেরুজালেম সংক্রান্ত জাতিসংঘ রেজুলেশন অনুযায়ী এর আইনগত মর্যাদা সংরক্ষণ করার ওপর বাংলাদেশ বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত মাসুদ ফিলিস্তিনি সমস্যা সমাধানে ‘মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়া’র মাধ্যমে ‘দুই-রাষ্ট্র সমাধান কাঠামো’তে পৌঁছানোর লক্ষ্যে বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমেই কেবল এ অঞ্চলের স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা হতে পারে।
সংকটময় এই পরিস্থিতিতে, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গত ১৩ ডিসেম্বর ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি একাত্মতা ঘোষণার জন্য আহূত ওআইসির বিশেষ সম্মেলনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের যোগদান ও বাংলাদেশের ভূমিকার কথাও তিনি এ সভায় তুলে ধরেন।
সেনেগালের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ফোডি সিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের স্থায়ী পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রদূত রিয়াদ এইচ মানসুর বক্তৃতা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, জেরুজালেমের মর্যাদার প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের এই একতরফা, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও রূঢ় সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। জাতিসংঘের যে সকল সদস্যরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য শান্তি প্রক্রিয়াকে সমর্থন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে নিন্দা জানিয়েছে, বিশেষ করে নিরাপত্তা পরিষদে এ-বিষয়ে ভূমিকা রেখেছে তাদের এ সকল কূটনৈতিক প্রচেষ্টাকেও রাষ্ট্রদূত মানসুর সাধুবাদ জানান।
অন্যদিকে, এ সভায় তুরস্কের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ফেরিদূন হাদি সিনিরলিওগ্লু তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান আয়োজিত ইস্তাম্বুলের বিশেষ ওআইসি সামিটের সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন