যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম নিউইয়র্ক ম্যানহ্যাটানে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন

লোয়ার ম্যানহ্যাটানের দক্ষিণ প্রান্তে নদীর তীরেই বাউলিং গ্রিনে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংগীতের সুরে সুরে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করলেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক এডামস, কাউন্সিলসদস্য শাহানা হানিফ, কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম ও কম্যুনিটি একটিভিস্ট মাজেদা উদ্দিন।

এই প্রথম বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে নিউইয়র্ক সিটির মত কসমোপলিটন সিটিতে মেয়রের উদ্যোগে বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা উত্তোলিত হল। এর আগে আমেরিকার ন্যাশনাল এ্যানথেম স্টার স্প্যাংগেল্ডর সাথে লাল-নীল-সাদার জাতীয় খচিত পতাকা উত্তোলিত হয়। এই পতাকা বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ওড়ে বাউলিং গ্রিনে।

বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা ম্যানহ্যাটানে জাতিসংঘের সদর দফতরে উড়ছে ১৯৭৪ সালে সদস্যপদ লাভের দিন থেকেই। এর বাইরে ম্যানহ্যাটানে রকেফেলার সেন্টারে স্কেটিং রিংকের চারদিকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের পতাকা উড়তো একদা। বাংলাদেশের পতাকা ৯০এর দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত উড়েছে প্রমিথিউসের ভাস্কর্যের ওপরে। এতদিন পরে এই প্রথম মেয়রের উদ্যোগে এই পতাকা উত্তোলিত হলো নিউইয়র্ক সিটিতে। আর এর মূল উদ্যোক্তা বাংলাদেশ কম্যুনিটির একটিভিস্ট, সেইফেস্টের সভাপতি মাজেদাউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটায় বাউলিং গ্রিনে এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে মেয়র এরিক এডামস বলেন, পৃথিবীতে একটি মাত্র দেশ আছে, যেখানে যে কেউ যে কোনো দেশ থেকে এসে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। বাংলাদেশী ইমিগ্রান্টরা তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি তার অফিসের বাংলাদেশী কর্মকর্তা মীর হাসানের নাম উল্লেখ করে বলেন, তিনিও ইমিগ্রান্টদের স্বপ্ন পূরণের প্রমাণ। মীর হাসান তখন সানগøাস পরে মেয়রের পাশেই ছিলেন। অপর পাশে কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম।

মেয়র বলেন, গত সপ্তাহে বাংলাদেশ কম্যুনিটি গ্রেসি ম্যানসনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে। তারা তাদের বর্ণাঢ্য সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে।

মেয়র এডামস বলেন, আমি বাংলাদেশীদের নতুন বন্ধু নই। ব্রæকলীন বরো প্রেসিডেন্ট হিসাবে আমি প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশীদের সাথে কাজ করছি। আমি দেখেছি ব্যবসার প্রতি, ফ্যামিলির প্রতি, পাবলিক সেফটির প্রতি তাদের নিষ্ঠা ও ভালোবাসা।

মেয়র এরিক এডামস বলেন, এটা আমার জন্য সম্মানের যে আমি বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করার সুযোগ পেয়েছি। তিনি পতাকা তোলার আগে বলেন, Happy Happy Independence Day for this great community. এরপর বাংলাদেশের পতাকা মেয়রের উদ্যোগে তোলার উদ্যোক্তা ও রূপকার মাজেদা উদ্দিন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মেয়র এডামসকে বাংলাদেশীদের ‘ভাই’ বলে উল্লেখ করে বলেন, এটা আমাদের জন্য শুধু একটি বিজয় নয়, এটা একটা ঐতিহাসিক ঘটনা। তিনি এই বিল পাশে সহায়তা করার জন্য কাউন্সিলউয়োম্যান শাহানা হানিফকে অভিনন্দন জানান।
উল্লেখ্য অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শাহানা হানিফসহ কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম। মেয়রকে পরিচয় করিয়ে দেন মেয়র অফিসের ডিরেক্টর বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত মীর হাসান।

প্রথমে আমেরিকার ন্যাশনাল এ্যানথেমের সাথে আমেরিকার পতাকা, তারপর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সাথে বাংলাদেশের পতাকা, উত্তোলন করার পর দুই দেশের পতাকা পতপত করে উড়ছিল বাতাসে।

সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন সবিতা দাশ, চন্দ্রা রায়, শামীম সিদ্দিকী, মনিকা রায় চৌধুরী, রুনা রায়।