‘যেদিক তাকাই সেদিকে শুধুই কান্না আর কান্না, বুঝতে পারছি না কী হলো’
খোদেজা বেগমের জন্ম পাহাড়ে। বেড়ে ওঠা, বিয়ে, সংসার সবই পাহাড়েই। গত দুদিনে পাহাড়ে যে দুর্যোগ ঘটলো তেমন ঘটনা পঞ্চাশ বছরের জীবনে এই নারী দেখেননি বলে জানিয়েছেন। পাহাড়ি-বাঙালি দ্বন্দ্ব দেখেছেন, কিন্তু এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ তিনি দেখেনি।
চোখের সামনে এত বড় দুর্যোগ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। চোখের চাউনিতেও আতঙ্ক, ভয়, সংশয় আর চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। যে কোনও সময় আবার পাহাড় ধসে পড়তে পারে এই আতঙ্কে আছেন তিনি।
রাঙামাটি শহরের শিমুলতলী এলাকায় খোদেজা বেগমের বাড়ি। তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে আমার ঘরের চালের ওপর মাটি পড়ে। প্রথম ভেবেছিলাম কেউ নালা (শত্রুতা করা) করে দিছে হয়তো।
তাই ঘর দেখে বের হয়ে ওপরের দিকে তাকাই। দেখি বড় একটি মাটির চাঁই নিচের দিকে গড়িয়ে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবেশীদের ডেকে ঘর থেকে বের করি। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাই। চোখের সামনে আমার ঘরটি মাটির নিচে চাপা পড়ে। জন্মের পর এমন দুর্যোগ আর দেখিনি।’
শিমুলতলীর বাড়িতে একাই থাকেন খোদেজা। ছেলে থাকে শহরে। চোখের সামনে এ বিপর্যয় দেখে ভাষাহীন হয়ে পড়েছেন এই নারী। তিনি যে পাহাড়ের পাদদেশে থাকতেন তার পরের পাহাড়েই চাকমাদের বাস। সেখানে পাহাড় ধসে ১১ জন নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি।
খোদেজা বলেন, ‘যেদিক তাকাই সেদিকে শুধুই কান্না আর কান্না, বুঝতে পারছি না কী হলো।’ রাঙামাটি শহর ও আশেপাশের উপজেলায় সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত পাহাড় ধসে চার সেনা সদস্যসহ ৯৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার সকাল থেকেই আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে। অন্ধকারে উদ্ধার কাজ চালানোর মতো সরঞ্জাম না থাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তা স্থগিত রাখা হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন