যে কারণে অ্যাটর্নি জেনারেলকে সরালেন ট্রাম্প

মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার স্থলে চিফ অব স্টাফ মাথ্যু হুইটাকেরকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের পর দিনই রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তাকে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট।

শীর্ষ এ আইনপ্রণেতার সম্পর্কে বিভিন্ন সময়ে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাষ্ট্রীয় প্রধান আইন কর্মকর্তার পদে সেশনসকে যে ট্রাম্প মোটেও সহ্য করতে পারছিলেন না, সেটি স্পষ্টই বোঝা গেছে বিভিন্ন সময়ে তার দেয়া বক্তব্যে।

স্থানীয় সময় বুধবার এক টুইটবার্তায় সেশনসকে সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। টুইটারে তিনি লেখেন- সেশনসকে এতদিন দায়িত্ব পালন করার জন্য ধন্যবাদ। তার মঙ্গল কামনা করছি।

এ বরখাস্তের ঘটনা যে খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়াই ঘটেছে মোটেও তেমনটি নয়। তারিখবিহীন পদত্যাগপত্রে সেশনস যে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি সেটি স্পষ্ট ধরা পড়েছে।

আলাবামার সাবেক এ সিনেটর আগে ট্রাম্পের সমর্থক ছিলেন। তিনি ওই চিঠিতে লিখেছিলেন- প্রিয় প্রেসিডেন্ট আপনার অনুরোধে আমি আমার পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি।

রিপাবলিকান এ প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি লিখেছেন, সবচেয়ে বড় কথা- আমি অ্যাটর্নি জেনারেল থাকার সময় আমরা আইনের শাসনকে বলবত রেখেছি।

সেশনসের সঙ্গে ট্রাম্পের বিবাদের শুরুটা হয়েছিল ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। তখনই সেশনস রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে যে তদন্ত হচ্ছিল, সেখান থেকে সরে আসেন। এ দায়িত্ব তার অধীনস্থ রড রোজেনস্টেইনকে দেন। এর পর থেকেই প্রকাশ্যে ট্রাম্প সেশনসের বিরুদ্ধে নানা ধরনের সমালোচনামূলক কথা বলতে থাকেন।

এ ছাড়া ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার পক্ষে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগের ব্যাপারে বিচার বিভাগের তদন্ত নিয়ে সেশনসের ওপর ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হন।

ট্রাম্প যে সেশনসের ওপর কতটা ক্ষুব্ধ সেটি বোঝা গেছে ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে। ওই সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি এ তদন্ত থেকে সরে যাবেন এই কথা আমাকে আগে বললে আমি এ দায়িত্ব তাকে দিতাম না। আমি অন্য কাউকে এ কাজের জন্য নিতাম।

সেশনস তদন্তভার থেকে সরে যাওয়ার পর বিশেষ কাউন্সেল রবার্ট মুলারের চলমান তদন্ত-প্রক্রিয়া নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট ছিলেন ট্রাম্প।

মুলার প্রতিনিয়ত ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টসিয়াল ক্যাম্পেইন এবং মস্কোর মধ্যে কোনো যোগসূত্র আছে কিনা এমন তথ্যপ্রমাণ খুঁজে বেড়াচ্ছেন।

আগে থেকেই গুঞ্জন ছিল নভেম্বরের মধ্যবর্তী নির্বাচনে পরেই হয়তো জেফ সেশনসকে বরখাস্ত করা হতে পারে। আর সেটিই এখন সত্য প্রমাণিত হল। সূত্র : বিবিসি।