যে কারণে জন্মদিন পালন করতেন না বঙ্গবন্ধু

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজের জন্মদিন কোনো দিন পালন করেননি। কিন্তু কী কারণে তিনি জন্মদিন পালন করতেন না তা জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কোনোদিন নিজের জন্মদিন পালন করতেন না। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি আমার জন্মদিন পালন করি না। যে জাতি অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটায়, কথায় কথায় গুলি করে হত্যা করা হয়, সে জাতির নেতা হিসেবে আমি জন্মদিন পালন করতে পারি না।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিজ্ঞা ছিল বাঙালি জাতির সার্বিক মুক্তি। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য তিনি বারবার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেছিলেন। মৃত্যুর ভয়ে তিনি থেমে থাকেননি, বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।

মঙ্গলবার ঢাকায় সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে স্বর্ণ-কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন আয়োজিত স্বর্ণ-কিশোরী জাতীয় কনভেনশন-২০১৭ এ বক্তৃতায় সারাদেশ থেকে আগত প্রায় ৫ হাজার কিশোরীর উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার জন্য এক কাতারে দাঁড় করিয়েছিল। তিনি বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের জন্য জীবনের বহুদিন জেলে কাটিয়েছেন। জেল-জুলুম তাকে দাবিয়ে রাখতে পারেনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টির পর তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য সৃষ্টি হয়নি। বাঙালিদের নিজেদের ভাগ্য নিজেদের নির্ধারণ করতে হবে।’

‘১৯৪৮ সাল থেকেই পরিকল্পিতভাবে তিনি (বঙ্গবন্ধু) দেশের স্বাধীনতার জন্য ধীরে ধীরে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের নির্বাচন, ১৯৫৬ সালে শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৭ সালে গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ তারই ধারাবাহিকতা,’-যোগ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী ।

কিশোরীদের উদ্দেশ্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সবাইকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ হতে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের সেবা করতে হবে। ডিজিটাল সুবিধা গ্রহণ করতে হবে। ডিজিটাল ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আজ তারই কন্যা বাস্তবায়ন করছেন। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্ববাসীর কাছে প্রসংশিত হচ্ছে। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। এ উন্নয়নের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।

স্বর্ণ-কিশোরী নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং সিইও ফারজানা ব্রাউনিয়া অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।