যে কারণে বুর্জ খলিফায় পৃথক সময়ে ইফতার

পৃথিবীর সর্বোচ্চ ইমারত বুর্জ খলিফা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে আধুনিক স্থাপত্যশৈলির এই ভবনটি অবস্থিত। ভবনটিতে নিচ তলায় যিনি থাকেন, সর্বোচ্চ তলার মানুষটির সঙ্গে তার নানা বিষয়ে পার্থক্য বিদ্যমান। এই পার্থক্য আরো স্পষ্ট হয় পবিত্র রমজানে।

একই ভবনে অবস্থান করেও একই সময়ে সেখানে ইফতার করা সম্ভব নয়। এজন্য ২০১১ সালে এক ফতোয়ার মাধ্যমে ভবনটিতে অবস্থানকালীন বাসিন্দাদের জন্য পৃথক সময়ে সেহরি ও ইফতার ঠিক করে দেয়া হয়।

সে সময়ে দুবাই ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের ফতোয়া বোর্ডের প্রধান আহমেদ আব্দুল আজিজ আল হাদ্দাদ জানান, বুর্জ খলিফা প্রায় এক কিলোমিটার উচ্চতা সম্পন্ন। এর অর্থ সেখানে নিচতলায় যখন সূর্য ডুবে গেছে, সর্বোচ্চ তলার মানুষ তখনো সূর্য দেখতে পাচ্ছেন।

তিনি বলেন, উচ্চতার পার্থক্যের কারণেই বুর্জ খলিফার বাসিন্দারা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ইফতার, সেহরি, ফজরের নামাজ ও মাগরিবের নামাজ পড়বেন। নিচতলার বাসিন্দাদের দুই মিনিট পর উপরের তলার বাসিন্দা ইফতার করবেন।

এই ফতোয়ার পর থেকে প্রত্যেক বছর রমজানে বুর্জ খলিফার বাসিন্দারা পৃথক সময়ে ইফতার ও সেহরি করে আসছেন।

অবশ্য সে সময়েই আরেক আলেম মোহাম্মদ আল-কুবাইশি জানান, বুর্জ খলিফার নিচতলা থেকে ৮০তলা পর্যন্ত বসবাসকারীরা যে সময় ইফতার করবেন, তার চেয়ে দুই মিনিট পরে করবেন এরপর থেকে ১৫০তলা পর্যন্ত বসবাসকারীরা। আর এর উপরের তলার বাসিন্দারা ইফতার করবেন আরো তিন মিনিট পর।

জানা যায়, ১৬০তলা বিশিষ্ট পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ইমারত বুর্জ খলিফা ২০১০ সালে চালু হয়। এর উচ্চতা ২ হাজার ৭১৭ ফুট। এই উচ্চতার কারণেই সেখানে সময়ের পরিবর্তন। অর্থাৎ ইমারতের নিচতলায় যখন সূর্য ডুবে, ১৬০তম তলায় ডুবে এর আরো তিন মিনিট পর।

আবার সূর্য উঠার সময় ঘটে উল্টো ঘটনা। তখন ১৬০ তলায় ভোরটা তিন মিনিট আগেই হয়ে যায়। একই ভবনে সকাল-সন্ধ্যার এই হেরফেরের কারণেই সেখানে ইফতার ও সেহরির সময়েও ব্যবধান।

সূত্র: দ্য ইউএই নেশন, বিবিসি