যে কারণে মিয়ানমারের পাশে দাঁড়িয়েছে চীন

মিয়ানমারে সর্বশেষ সহিংসতায় দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচারে প্রায় ৫ লাখেরও বেশি মানুষ রাখাইন রাজ্য ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো ক্ষমতাধর দেশ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও চীনের মতো শক্তিশালীদের দেশের সমর্থনের কারণে নিপীড়ন এখনও অব্যাহত রেখেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

কিন্তু চীন কেন এককভাবে মিয়ানমারের এই জাতিগত নিধনকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে সারাবিশ্বে বিচার-বিশ্লেষণ করা শুরু হয়ে গেছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাখাইন রাজ্য রোহিঙ্গামুক্ত করতে পারলে বিরাট স্বার্থ রয়েছে চীনের। আর সেই কারণে অন্যায়-অবিচার হচ্ছে জেনেও মিয়ানমারের পক্ষে কথা বলছে এশিয়ার ক্ষমতাধর দেশটি।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রোহিঙ্গাদের আবাসস্থল রাখাইন রাজ্যে লোভনীয় বন্দর, গ্যাস ও তেলের দিকে চীনের নজর। রাখাইন হলো এক বিস্তৃত কৃষি জমির এলাকা। প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধও বটে। তাছাড়া রাজ্যটির পাশেই রয়েছে উপকূল, উপকূলীয় গ্যাস রিজার্ভার। বর্তমানে মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের যে বড় ধরনের অল্প কিছু অর্থনৈতিক প্রকল্প চলমান আছে তার মধ্যে কিয়াউকপু এলাকায় গভীর সমুদ্র বন্দর ও অর্থনৈতিক জোন তৈরিতে ৯০০ কোটি ডলার বিনিয়োগ অন্যতম।

আর এই কিয়াউকপু এলাকাটি রাখাইন রাজ্যের কাছাকাছি অবস্থিত। শুধু তাই নয়, চলতি বছরের এপ্রিলে রাখাইন থেকে চীনের ইউনান প্রদেশ পর্যন্ত ২৪৫ কোটি ডলারের পাইপলাইন উদ্বোধন করা হয়েছে। এই পাইপ লাইনটি হলো মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করা অশোধিত তেল বেইজিংয়ে নেয়ার একটি নিরাপদ ও মূল রুট।

এখন বলা যায়, এসব ব্যবসায়িক স্বার্থের কারণে মিয়ানমারের পাশে দাঁড়ানোর পন্থা অবলম্বন করেছে চীন। যদিও রাখাইন রাজ্যে চীনের বিরাট অংকের প্রকল্পের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে গভীর হতাশা। তারা চীনের এই প্রভাবকে ইতিবাচক চোখে দেখছে না।