যে কারণে সাংবাদিকদের সামনেই স্বামীকে তালাক দিলেন মুসলিম মহিলা!
অপেক্ষা করেছিলেন ১৮ মাস ধরে। কিন্তু ফল মেলেনি। একরকম বাধ্য হয়েই সাংবাদিকদের ডেকে বিস্তারিত জানিয়ে স্বামীকে তালাক দিলেন স্ত্রী। সম্প্রতি ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে।
আদালতের দ্বারস্থ হয়ে ফল মেলেনি। তার পাঠানো আইনি নোটিসে সাড়া দেননি স্বামী। মৌলবির কাছে গিয়ে খুলার আবেদন করলেও, মৌলবী তাতে আমল দেননি। আর কোনও রাস্তা তার সামনে ছিল না বলে জানাচ্ছেন শাহজাদা খাতুন। তাই ক্যামেরার সামনেই একটি আইনি কাগজে সই করে স্বামীকে ডিভোর্স দিলেন পেশায় স্কুল শিক্ষিকা এই মহিলা।
লখনউয়ের একটি স্কুলে পড়ান শাহজাদা। ২০০৫ সালের নভেম্বরে লখনউয়ের ডালিগঞ্জের জুবের আলির সঙ্গে বিয়ে হয় তার। শাজাদার দাবি, বিয়ের পর থেকেই তার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করেন স্বামী। সহ্য করতে না পেরে অবশেষে তিনি বাড়ি ছেড়ে দেন। গত ১৮ মাস ধরে শাজাদা আলাদা থাকেন। আর তখন থেকেই বিবাহবিচ্ছেদের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রথমে শাজাদা অবশ্য আদালতের দ্বারস্থ হননি। মুসলিম আইন অনুযায়ী, খুলার জন্য আবেদন জানান তিনি। মুসলিম মহিলারা এই খুলার মাধ্যমেই বিবাহবিচ্ছেদ চান। তবে এটা অনেক সময়সাপেক্ষ। শাজাদা খুলা চেয়ে মৌলবিকে জানান। কিন্তু বহু দিন কেটে গেলেও মৌলবি বা তার স্বামী কেউই তার আবেদনকে গুরুত্ব দেননি। ৬ সেপ্টেম্বর শাহজাদা তার স্বামীকে আইনি নোটিস পাঠান। কিন্তু তাতেও স্বামীর কোনও হেলদোল ছিল না। তাই বিবাহবিচ্ছেদের জন্য এই অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন তিনি বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান।
তবে এই ভাবে বিবাহবিচ্ছেদকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না জানিয়েছেন মুসলিম পার্সোনাল ল’বোর্ডের সদস্য মৌলানা খালিদ রশিদ ফারাঙ্গি মাহলি। অন্যদিকে তিন তালাক বেআইনি ঘোষিত হওয়ার পর এই ভাবে কোনও মহিলা বিবাহবিচ্ছেদের জন্য এগিয়ে এসেছেন তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন মুসলিম মহিলা লিগের সাধারণ সম্পাদক নাইস হাসান। মৌলানা খালিদের বিপক্ষে গিয়ে নাইস জানান, শাহজাদা স্বামীর সঙ্গে থাকতে চান না তাই এই পদক্ষেপ করেছেন। কারও তাতে আপত্তি থাকলে আদালতে যেতে পারেন।
তিন তালাককে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে গিয়েছিলেন মুসলিম মহিলারা। শীর্ষ আদালত তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথাকে অবৈধ ঘোষণা করার পরে এই ঘটনা বেশ আলোড়ন ফেলেছে দেশে। তিন তালাক, নিকাহ হালালা, বহুবিবাহের বিরুদ্ধে ক্রমশই প্রতিবাদের সুর চড়াচ্ছেন মুসলিম মহিলারা। আদালতে তাৎক্ষণিক তিন তালাক প্রথা অবৈধ আখ্যা পেয়েছে। এ বার লখনউয়ের ঘটনা মুসলিম মহিলাদের সামাজিক আন্দোলনে অন্য মাত্রা যোগ করল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন