যৌনকর্মীদের দুর্গাপূজার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট


আদালতের হস্তক্ষেপে অবশেষে কাটল জট। এবার নিজেদের পছন্দমতো জায়গাতেই পূজার অনুমতি পেলেন কলকাতার সোনাগাছির যৌনকর্মীরা।
তবে কলকাতা হাইকোর্ট সোনাগাছির পূজার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বেঁধে দিয়েছে। মণ্ডপ হবে ২০ ফুট লম্বা এবং আট ফুট চওড়া। দুর্গাপূজা শুধু নয় লক্ষ্মীপূজাও হবে ওই প্যান্ডেল। লক্ষ্মীপূজা শেষ হলে মণ্ডপ খোলার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি দেবাংশু বসাক। এদিকে এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লিতে এখন উৎসবের আমেজ। খবর সংবাদ প্রতিদিন’র।
খবরে বলা হয়, সোনাগাছির দুর্গাপূজা জটিলতা নতুন কিছু নয়। প্রতিবারই কলকাতা হাইকোর্টের একেবারে শেষ মুহূর্তের সিদ্ধান্তে পূজা হয়। গত তিন বছর ধরে এটাই চলে আসছে। এবারও পূজার আগে থেকেই জট তৈরি হয়। যৌনকর্মীদের দুর্গাপূজার অনুমতি নিয়ে পুলিশ, পৌরসভা ও দমকলকে বৈঠকে বসার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বৈঠকের সিদ্ধান্ত আদালতকে জানানো হয়। তার ভিত্তিতে শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি জানান, যৌনকর্মীরা তাদের বেছে দেওয়া জায়গাতেই পূজা করতে পারবেন। তবে তাদের কিছু নিয়ম মেনে মণ্ডপ করতে হবে। ২০/৮ ফুটের মধ্যে প্যান্ডেল করতে হবে। দুর্গাপূজায় তৈরি হওয়া প্যান্ডেল কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা পর্যন্ত থাকবে। লক্ষ্মীপূজা শেষ হলে প্যান্ডেল খুলে দিতে হবে। এদিকে আদালতের এই রায়ে উল্লাসিত সোনাগাছি যৌনপল্লী।
এর আগে শুনানিতে বিচারপতি রাজ্যকে বলেছিলেন, কেন বারবার ওই সংগঠনকে অনুমতি চাইতে আদালতে আসতে হবে? প্রথমে প্রশাসন যৌনপল্লির ভিতর একটি দুর্গামন্দিরে পূজার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু যৌনকর্মীরা তা মানতে চাননি। এবছর নীলমণি মিত্র স্ট্রিট ও মসজিদ বাড়ি স্ট্রিটের সংযোগস্থলের কাছে তারা পূজা করার কথা বলেন। রাজ্য এই নিয়ে আদালতকে জানিয়েছিল, সংকীর্ণ রাস্তায় পূজা হলে নাগরিক-দুর্ভোগ বাড়বে। তাই আপত্তি করা হয়েছে। কমপক্ষে ১২ ফুট জায়গা ছাড় দেওয়া না হলে অনুমতি দেওয়া যায় না। যা শুনে বিচারপতি বসাক জানিয়েছিলেন, কলকাতার বহু জায়গায় ১২ ফুট ছাড় না দিয়ে পূজা হয়। সেই সব পূজার তালিকা কি চেয়ে পাঠানো হবে? দুর্বার-এর আইনজীবীরা দাবি করেন, যে রাস্তায় পূজা করা হবে, তা ৩৭ ফুট চওড়া। যথেষ্ট প্রশস্ত। তাই পুলিশ বা পৌর-কর্তৃপক্ষের আপত্তির প্রশ্ন ওঠে না। দুর্বারের পক্ষ থেকে বলা হয়, এমন যুক্তিতে কলকাতার অর্ধেক নামী পূজার অনুমতি বাতিল হওয়া উচিত। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর শেষ পর্যন্ত আদালত যৌনকর্মীদের অবস্থানকেই স্বীকৃতি দিল।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন