রংপুরের পল্লী নিবাসের লিচু তলায় চিরঘুমে এরশাদ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদকে রংপুরের পল্লী নিবাসে সমাহিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৪৪ মিনিটে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাকে সমাহিত করা হয়।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতিকে দাফন করার আগে বিকেল ৫টা ৪১ মিনিটে তার প্রতি শোক জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
মৃত্যুর পর এরশাদকে ঢাকায় দাফন করা হবে, শুরুতে দলের শীর্ষ নেতারা এমন সিদ্ধান্ত নিলেও নেতাকর্মীদের দাবির মুখে রংপুরেই দাফন করা হলো তাকে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদ রংপুর-৩ (সদর) আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি এ আসন থেকে টানা ছয়বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। রংপুরকে জাতীয় পার্টির ঘাঁটি বিবেচনা করা হয়। এরশাদ জেলে থেকেও এখান থেকে ভোট করে বারবার নির্বাচিত হয়েছেন।
পল্লীবন্ধুকে নিয়ে রংপুরের মানুষের এক ধরনের আবেগ কাজ করে। সেই আবেগ থেকেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে এখানকার নেতাকর্মীরা পল্লী নিবাসের লিচু বাগানে এরশাদের জন্য কবর খুঁড়ে রাখেন। তাকে সেখানেই দাফন করা হলো।
এবিষয়ে জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রথম থেকেই চাচ্ছিলাম এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করবো। তবে ভাবি (রওশন এরশাদ) বিভিন্ন কারণে চাচ্ছিলেন তাকে ঢাকায় দাফন করতে। তবে রংপুরের মানুষের আবেগ ও ভালোবাসার কারণে সর্বসম্মতভাবে তাকে এখানেই সমাহিত করা হলো। ভাবিও এতে রাজি হয়েছেন।
সেইসঙ্গে রংপুরে পল্লী নিবাসে এরশাদের কবরের পাশে নিজের জন্য কবরের জায়গা রাখার অনুরোধও করেছেন রওশন এরশাদ।
এর আগে রংপুরে এরশাদের চতুর্থ জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। বেলা আড়াইটায় রংপুর কালেক্টরেট মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তবে জানাজা শেষে লাশবাহী গাড়ি মাঠ ছেড়ে যেতে চাইলে নেতাকর্মীরা বাধা দেন। তারা এরশাদকে রংপুরে দাফনের দাবিতে সেখানেই অবস্থান করেন। তবে বাধা ঠেলেই লাশ এরশাদের বাসভবন পল্লী নিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়।
তারও আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও পুরনো বিমানবন্দর থেকে এরশাদের মরদেহবাহী হেলিকপ্টার রংপুরের উদ্দেশে রওনা হয়।
এরশাদের কফিনের সঙ্গে যান তার ছোট ভাই ও জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের, এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি সাদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, আজম খান, এটিইউ তাজ রহমান ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু।
প্রসঙ্গত, গত রোববার ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন। রোববার বাদ জোহর ঢাকা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় এবং বাদ আসর বায়তুল মোকাররম মসজিদে তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন