রংপুরের পীরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত

রংপুরের পীরগঞ্জে ক্রয়কৃত জমি বেদখলের চেষ্টার প্রতিবাদ করায় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দু’দফায় শারিরীকভাবে লাঞ্ছিতসহ গুরুতর আহত করেছে প্রতিপক্ষ। আহত শিক্ষককে রংপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের জলাইডাঙ্গা গ্রামে। এ ব্যাপারে ভেন্ডাবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

‎অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জলাইডাঙ্গা গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর পুত্র অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম (বর্তমান ঠিকানা- ভেন্ডাবাড়ী) ১৯৬৩ সালে তাঁর নানা মৃত কলিমউদ্দিন কর্তৃক প্রদত্ত্ব জলাইডাঙ্গা মৌজা, জেএল নং- ৭, আরএস দাগ নং- ৪০৬, জমির পরিমান ২৭ শতাংশ দলিল মূলে প্রাপ্ত হয়ে নানার মৃত্যুর পর শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করে আসছিলেন।

সম্প্রতি পাশ্ববর্তী জমির মালিক জলাইডাঙ্গা গ্রামের মৃত তালেব আলী’র পুত্র আহসান হাবীব সবুজ প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক আব্দুস সালামের জমিতে রোপনকৃত প্রায় ৫০ বছর পূর্বে লাগানো ইউক্লিপটাস গাছগুলো ও জায়গা নিজের দাবি করে সার্ভেয়ার কর্তৃক পরিমাপ করা খুটি উপড়ে ফেলেছেন। তাছাড়া আহসান হাবীব সবুজের সঙ্গে শিক্ষক আব্দুস সালামের সাড়ে ৫ শতাংশ জমি রেওয়াজ বদলে প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হয়।

তারই প্রেক্ষিতে আহসান হাবীব সবুজের পুকুর ভরাট, আইসিসি পিলার দিয়ে প্রাচীর নির্মাণে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করেন শিক্ষক আব্দুস সালাম। কিন্তু রেওয়াজ বদলের জমি রেজিষ্ট্রি করে দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন আহসান হাবীব। এ বিষয়ে ওই শিক্ষক স্থানীয় জামে মসজিদ ও ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত অভিযোগ করলে আহসান হাবীব সবুজ ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।

‎একপর্যায়ে গত বুধবার (১৯ মার্চ-২৫) সকালে শিক্ষক আব্দুস সালাম অটো রিকশাযোগে নিজ জমি দেখভালের জন্য গেলে ওঁত পেতে থাকা আহসান হাবীব সবুজ ও তার লোকজন তাঁকে অটোরিকশা থেকে টেনে হেঁচড়ে পাকা রাস্তায় ফেলে বেদম প্রহার করে। স্থানীয় লোকজন ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী গোপালপুর বাজারের সোহরাব আলীর ছ’মিলে নিয়ে গেলে সেখানেও পিছু নেয় ক্ষিপ্ত আহসান হাবীব ও তার লোকজন। সেখানেও ছ’মিলের বাতা দিয়ে এলোপাতাড়ি উপর্যুপরিভাবে পেটানো হয় ওই শিক্ষককে।

‎এ ব্যাপারে প্রত্যক্ষদর্শী ভবানী চন্দ্র বর্মন, সাহেব আলী ও তারা মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রকাশ্যে একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষককে পেটানো অমানবিক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আহসান হাবীব সবুজের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।