রংপুরের‎‎‎ পীরগঞ্জে সম্প্রীতির বার্তায় সরব বিএনপি-জামায়াত, নিস্ক্রিয় আ’লীগ, জাপা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতন এবং হাসিনার দেশত্যাগের পরপরই আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়রসহ দলের প্রভাবশালী নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। আবার অনেক আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের দেখা গেলেও দলীয় কার্যক্রমে তারা একেবারেই নিস্ক্রিয়। একই অবস্থা জাতীয় পাটি’র। আ’লীগ সরকারের পতনের পর পীরগঞ্জের রাজনীতিতে জাতীয় পাটির কোন কার্যক্রমই লক্ষ্য করা যায়নি।

‎এর বিপরীতে মাঠে সক্রিয় হয়েছেন বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারা দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। তারা যে কোনো পরিস্থিতিতে হিন্দু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।‎

‎দীর্ঘদিন পর রাজপথে প্রকাশ্যে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় জামায়াত ও শিবিরের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। যদিও সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দলীয় কার্যক্রম সবসময়ই চলমান ছিল, শুধু সরকারের দেওয়া মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে কিছুটা আড়ালে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হতো।

‎তারা আরও বলছেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর জাতীয় রাজনীতিতে গুরুত্ব বেড়েছে জামায়াতের। এখন রাজপথে সক্রিয় থাকার উপযুক্ত সময়। প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতি করতে চায় তারা।

‎এদিকে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরই চাঙ্গা ভাব ফিরে এসেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মধ্যে। উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নসহ ১টি পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে প্রায় প্রতিদিনই জনসভা, কর্মীসভা ও গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেতাকর্মীরা। প্রতিটি সভা সমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষনীয়।

‎রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্ত হয়েছে। বাকস্বাধীনতা ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন পর মুক্তমনে রাজপথে ফিরতে পেরে খুশি নেতাকর্মীরা। এখন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরে আসবে বলে আমাদের ধারণা। আমরাও সেই অনুপাতে কাজ করে যাচ্ছি।

তাই আমরা উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে রাজপথে নেমেছি।’ শেখ হাসিনা সরকার দমনপীড়ন, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার, পুলিশি হয়রানিসহ সব ধরনের নির্যাতন করে আমাদের কোণঠাসা করে রেখেছিল। আমরা সকল বাধা উপেক্ষা করে আমাদের সব কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি। জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীরা আমাদের ছেড়ে যাননি।

‎উপজেলা জামায়াতের আমীর সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘জামায়াত কিংবা শিবির কখনোই শেষ হয়ে যায়নি, এটি শেষ হওয়ার মতো দল নয়। সরকার আমাদের সঙ্গে যা করেছিল তা মোটেও যুক্তিযুক্ত ছিল না। সম্প্রতি আমরা ওসি, ইউএনও এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছি। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব দলের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে রাজনীতি করে যেতে চাই।