রংপুরের পীরগঞ্জে সহিংসতা: ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া সেই কিশোর গ্রেপ্তার
ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় কিশোর পরিতোষকে জয়পুরহাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার দেওয়া স্ট্যাটাসকে ঘিরেই রংপুরের পীরগঞ্জের মাঝিপল্লীতে সহিংসতার সূত্রপাত হয়।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তাকে জয়পুরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরেশ কুমার সরকার বলেন, মাঝিপল্লীর সহিংসতার ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আর ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় পরিতোষকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিতোষকে মঙ্গলবার রংপুরের সাইবার ট্রাইব্যুনালে তোলা হতে পারে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হতে পারে।
অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, রংপুরের পীরগঞ্জে মাঝিপাড়ার হামলার নেতৃত্ব দেন স্থানীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা রাশেদুল ইসলাম।
ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ, মসজিদের মাইক ব্যবহার করে লোকজনকে তিনিই উত্তেজিত করেন। আর হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেওয়া অনেকেই তাদের পরিচিত। যাদের সবাই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত বলেও দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
ফেসবুকে পরিতোষ নামে এক কিশোর একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে মসজিদের মাইকে বক্তব্য দিয়ে সবাইকে একত্রিত করেন স্থানীয় জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন মাওলানা রাশেদুল ইসলাম।
মাঝিপাড়ার ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই এই অভিযোগ করছেন। আর বেশিরভাগ হামলাকারী অপরিচিত হলেও আতাউর মুনশি, মসিয়ার, রবিউল, রোকন, মনজুরুল, ভুলু, আবুসহ এলাকার অনেককে চিনতে পারে মাঝিপাড়ার মানুষ। রাশেদুলসহ পরিচিতদের সবাই জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে দাবি করছেন তারা। ঘটনা বিশ্লেষণ করে একই কথা বলছেন পর্যবেক্ষকরা।
তবে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী এ ব্যাপারে এখনই মন্তব্য করতে না চাইলেও সরাসরি ঘটনায় জড়িত শুধু নয়, এর পেছনে ইন্ধনদাতাদেরও বের করে এনে শাস্তি নিশ্চিত করার কথা বলছেন।
পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক, নৃশংস এই ঘটনার শাস্তি তাদের পেতে হবে।
একই ভাষায় কথা বলেছেন পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি যত ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ আছে, তার সবই করবে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করে তাদের বিচার চেয়ে মিছিল-সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলো। রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করীম রাজু, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিয়ার রহমান সোমবার ক্ষতিগ্রস্ত মাঝিপল্লী পরিদর্শন করে ঘটনার জন্য সরাসরি জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেন।
সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সৌজন্যে: সময় টিভি নিউজ
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন