রংপুরে বাম্পার ফলনে পান, বাজারে কম দাম
রংপুরের পীরগঞ্জে পানের বাম্পার ফলন সত্বেও বাজার মূল্য কম হওয়ায় পান চাষীরা বিপাকে পড়েছে। ফলে চলতি সময়ে পান চাষ করে লাভের পরিবর্তে ব্যাপক লোকসান গুনতে হচ্ছে পান চাষীদের। অনেকে পানের বাজারে ধ্বস নামার মূলকারণ হিসাবে দায়ী করেছেন করোনাভাইরাসকে।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) সকালে উপজেলার সর্বোবৃহৎ তথা রংপুরের ঐতিহ্যবাহী পানের বাজার পীরেরহাট সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, কাক ডাকা ভোর বেলা থেকেই পীরেরহাট মাদ্রাসা মাঠে পান বিক্রেতারা অটো ভ্যান, মিনি ট্রাক, অটো চার্জার ভ্যান, মোটরসাইকেল এমনকি মাথায় করে তাদের উৎপাদিত পান নিয়ে বাজারে আসছেন।
ক্রেতারাও পীরগঞ্জ তথা রংপুর নয়, সুদুর দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনির হাট ও কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছেন পান ক্রয়ের জন্য।
পান চাষীরা জানান, পূর্বে যে পানের পোন বিক্রি হতো ১শ’৫০ থেকে ১শ’ ৮০টাকা তা এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪০ থেকে ৬০/৬৫ টাকায়। আগে যে পান ৪০/৬০টাকা বিক্রি হতো এখন সেই পান পোন প্রতি ৮/১২ টাকা।
উপজেলার খালিশা গ্রামের পানচাষী মাইকেল লাকড়া জানান, বর্তমান ঘন বর্ষার কারণে অনেক বরজে পানি জমে পান উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, তার উপর পানের বাজার খারাপ হওয়ায় যেন- মরার উপর খরার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে। তবে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে খুববেশি সময় লাগতো না, যদি পূর্বের মত পানের দাম থাকতো।
চৈত্রকোল ইউনিয়নের চককৃষ্ণপুর গ্রামের পানচাষী সাদেক হোসেন বলেন, ঋণ নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে বরজটি দাঁড় করেছি। পানের বাজারের যে অবস্থা, এতে ঋণের টাকা পরিশোধ দুরের কথা- এখন সংসার চালাতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে।
একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, বরজে কাজ করা দিনমজুরের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে গেছে। সেই তুলনায় বর্তমান যে পানের দাম তাতে পান বিক্রি করে মজুরির টাকা পরিশোধ করাও দুস্কর হয়ে পড়েছে।
এভাবে চলতে থাকলে পানচাষীরা পানচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার শালকুড় গ্রামের পান ক্রেতা সুজন মিয়া, লালমনির হাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রামের আকবর আলী, রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার মালিপাড়া গ্রামের আব্দুল হালিম জানান, বর্তমান করোনাভাইরাসের কারণে দোকানগুলোতে পান বিক্রির চাহিদা কমে গেছে। তাছাড়া দেশের বাহিরে পান রপ্তানী না হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান বলেন, পান চাষ একটি লাভজনক ফসল। প্রাকৃতিক বিপর্জয়ের কারণে সাময়িক এমনটা ঘটছে। তবে স্বল্প সময়ের মধ্যেই পানের বাজার স্বাভাবিক হবে বলে আমার বিশ্বাস।
তবে উপজেলায় মোট কত হেক্টর জমিতে পান চাষ করা হয়েছে এবং কতজন পানচাষী রয়েছে কৃষি কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক তার উত্তর দিতে পারেননি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন