র়ংপুরের মিঠাপুকুরে প্রশাসন ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করেন উপজেলা প্রশাসন। গত ১৩ জানুয়ারি উপজেলার কয়েকটি স্কুল কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা মেলায় বিজ্ঞান বিষয়ক স্টল, কুইজ ও বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।

জুলাই বিপ্লবের পর এবারের মেলায় স্বচ্ছতার পাশাপাশি বেশ জাঁকজমকপূর্ণ ছিল। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মন যখন দিনরাত পরিশ্রম করে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই উপজেলার দায়িত্ব পালন করছেন। তখন উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে উঠেপড়ে লেগেছে একটি স্বার্থনেশী মহল। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে উপজেলার সরকারি কর্মকর্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি, সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতির অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ইউএনও। স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার মধ্যে দিয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন ইউএনও বিকাশ চন্দ্র বর্মন।

প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় ২ জন শিক্ষার্থীর পুরাতুন আইডি কার্ড পরিধান নিয়ে। বিগত সরকারের পাইলটিং প্রোগ্রামের আওতায় শেখ রাসেল স্কুল অব ফিউচারের আওতাভুক্ত হয় উপজেলার পাইকান উচ্চ বিদ্যালয়। পাইলটিং প্রোগ্রামের বিশেষত্ব হলো, স্মার্ট বোর্ড, ডিজিটাল হাজিরা, আধুনিক কম্পিউটার ল্যাবের সমন্বয়ে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা।

গ্রামের অজপাড়াগাঁয়ে ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টির সুনামও রয়েছে। এর আগে জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জেলায় রানারআপ হয়েছিলেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অতীতের নিয়মানুযায়ী স্কুল ড্রেস পরিধান করে এবারের মেলায় বিভিন্ন ইভেন্টে ২০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ২ জন শিক্ষার্থী অভ্যাসবশত ২০২২ সালে প্রদানকৃত ইউনিক নাম্বার সম্বলিত পরিচয়পত্র পরিধান করেন।

যেখানে বঙ্গবন্ধু এবং শেখ রাসেলের লোগো ছিল। বিষয়টি দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের নজরে পড়লে তাৎক্ষণিক খুলে ফেলেন শিক্ষার্থীরা। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ইউএনও এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জড়িয়ে তীলকে তাল বানিয়ে ভুল তথ্যে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে বিষয়টিকে অতিরঞ্জিত উল্লেখ করে সচেতন মহল বলছেন, উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজ্ঞান মেলায় বঙ্গবন্ধুর লোগো ব্যবহার নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, মূলত প্রশ্নটাই ভুল। কারণ নতুন কোন কাজে বঙ্গবন্ধুর লোগো ব্যবহার করেননি প্রশাসন বা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। একজন কোমলমতি শিক্ষার্থীর পূরানো আইডি কার্ড ব্যবহার করাটা শিক্ষার্থীর সাময়িক আবেগের কারণ।

আইডি কার্ডটি নতুন শিক্ষাবর্ষ-২০২৫ সালের নয়। নতুন শিক্ষা বর্ষের হলেও কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠা যুক্তিযুক্ত ছিল। মাত্র ২ জন শিক্ষার্থী অতীতের অভ্যাস থেকে ভুল করাটা স্বাভাবিক। বিষয়টি সামান্য হলেও তীলকে তাল বানানো হয়েছে।

এতে প্রশাসন ভালো কাজ করার মানসিকতা হারানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার আশংকা রয়েছে। যা আগামী দিনের জন্য অশুভ সংকেত। বিষয়টিতে ইউএনওকে কোড করে এমনভাবে ফলাও করা হয়েছে যাতে এ্যাকশন হয় এবং মেলার পুরো কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়। অথচ প্রশ্নে ইউএনওর কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।

পাইকান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাওমুন নুহান বলেন, আমরা সরকারি যে কোন প্রোগ্রামে স্কুল ড্রেস ও আইডি কার্ড পরে আসতাম। অনেক পুরস্কার জিতেছি। এবারও শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছি। আমরা বড় কোন অপরাধ করিনি। স্যারেরা আমাদের আইডি কার্ড পরতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আমরা ছোট ভুল হতেই পারে। এভাবে চলতে থাকলে আমরা আর কোন প্রোগ্রামে আসবো না।

পাইকান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউজ্জামান বলেন, এবার মেলায় আমাদের স্কুলের ২০ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করেছে। তাদেরকে পুরনো পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে আগেই নিষেধ করা হয়েছিল। ওরা ছোট মানুষ এখনো অবুঝ মাত্র ২ জন ছাত্রী ভুলক্রমে হয়তো আইডি কার্ড পরেছে, তাৎক্ষণিকভাবে খুলেও ফেলে। বিষয়টি নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি দুঃখজনক।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র বর্মন বলেন, এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হয়েছে। উত্তর পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।