রাখাইনে নিহত ৮৪, মিয়ানমারের দাবি!

রাখাইন রাজ্যের মংডুতে গত ২৫ আগস্ট সহিংসতা শুরুর পর এক মাসে মাত্র ৮৪ জন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে মিয়ানমার সরকার। নিহত হওয়ার সরকারি সংখ্যা নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সকল মহলে।
এতোদিন পরে বিশ্বনেতাদের চাপে এ দাবি করেছে মিয়ানমার। অথচ মংডুর তুলাতুলি গ্রামেই এক দিনে গণহত্যায় হাজারের বেশি মানুষকে গুলি ও পুড়িয়ে হত্যা করেছে।
রোহিঙ্গা, হিন্দু, রাখাইনসহ অন্য নৃগোষ্ঠী এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নিয়েই নিহতের এই হিসাব দিয়েছে মিয়ানমারের তথ্য কমিটি, যা বুধবার(২৭ সেপ্টেম্বর) দেশটির সংবাদপত্রে এসেছে।
গত ২৫ অগাস্ট রাখাইনে সেনা ও পুলিশ ক্যাম্পে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর নির্বিচারে এই মুসলিম জনগোষ্ঠীকে হত্যার অভিযোগের মধ্যে মিয়ানমারের সরকারি এই ভাষ্য এল।
রাখাইন থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছেন, রাখাইনে তাদের নির্বিচারে হত্যার পাশাপাশি ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিচ্ছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, ধর্ষণ করা হচ্ছে নারীদের।
রোহিঙ্গাদের উপর এই দমন-পীড়নকে জাতিগতভাবে নির্মূল অভিযান হিসেবে দেখছে জাতিসংঘ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও মিয়ানমারের সমালোচনায় মুখর।
মিয়ানমার সরকার বরাবরই দাবি করে আসছে, রাখাইন রাজ্যে অভিযান নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো অতিরঞ্জিত খবর দিচ্ছে।
গণতন্ত্র ফিরলেও সেনাবাহিনীর কর্তৃত্বের মধ্যে থাকা মিয়ানমারে সরকারের নানা ভাষ্য নিয়ে বরাবরই আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো প্রশ্ন তুলে আসছে।
এবার অভিযানের সময় রাখাইন রাজ্যে বিদেশি সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়নি মিয়ানমার সরকার। একবার সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায় তাদের নেওয়া হলেও সেখানে সরকারের দাবির সঙ্গে বাস্তবতার নানা অসঙ্গতি তুলে আনেন সাংবাদিকরা।
প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা; এদের অনেকে বলেছেন, নিহত স্বজনকে ফেলে আসতে হয়েছে তাদের প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা; এদের অনেকে বলেছেন, নিহত স্বজনকে ফেলে আসতে হয়েছে তাদের।
সরকারের তরফে দেয়া হিসাবে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহতদের সংখ্যা জানানো হয়। নিহত কারা কোন জনগোষ্ঠীর, তা জানানো হয়নি। এক মাসে ৪৪ জন নিখোঁজ বলেও তথ্য কমিটি দাবি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মংডুতে গত বছরের অক্টোবরের সহিংসতার পর এক বছরে নিহতের সংখ্যা ১৬৩ জন এবং এই সময়ে নিখোঁজের সংখ্যা ৯১।
বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডু জেলায় মুসলিম রোহিঙ্গাদের জনাধিক্য রয়েছে। বাংলাদেশে এদফায় পালিয়ে আসা পৌনে ৫ লাখ শরণার্থীর অধিকাংশ এই জেলার।
রাখাইনে সেনা অভিযান ৫ সেপ্টেম্বর বন্ধ হওয়ার দাবি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি করলেও তারপরও সেখানে বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার প্রমাণ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো দিয়েছে।
কক্সবাজারে নাফ নদীর ওপারে মংডুতে ধোঁয়া উড়তে বাংলাদেশ সীমান্ত থেকেও দেখা গেছে।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন