রাঙামাটিতে ভারী বৃষ্টি কমলেও জনজীবন বিপর্যস্ত, পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেড়েছে উৎপাদন

রাঙামাটিতে ভারী বৃষ্টি কমলেও জনজীবন এখনো বিপর্যস্ত। তবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট পাহাড় ও সড়ক ধসের ঘটনা ঘটেছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সড়কের ওপর পাহাড়ধসের মাটি পড়ে সাময়িকভাবে কিছু সড়কে যান চলাচল বন্ধ হলেও সড়ক বিভাগের তৎপরতায় আবারও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

তবে কাউখালী ও জুরাছড়িতে দুইটি সড়ক ধসে পড়ে যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রবল বৃষ্টিতে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় কাউখালী-ঘিলাছড়ি সংযোগ সড়ক ধসে পড়ে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। জুরাছড়ি উপজেলার যক্ষা বাজারে সড়কটি ধসে পড়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে ওই এলাকার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।

রাঙামাটি প্রশাসনের তথ্য অনুযাযী, জেলায় মোট ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। টানা বর্ষণে এই পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৩টি বসতঘর। যা আরও বাড়বে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬২৮০ হেক্টর জমি। জেলায় ৫৪০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রর সিনিয়র অবজারবার কেচিনু মারসা জানিয়েছেন, রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ায় কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বেড়েছে। সোমবার (২ জুন) সকাল থেকে ১৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। তাছাড়া চালু হয়েছে ৪টি ইউনিট।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, এতদিন কাপ্তাই লেকে পানি স্বল্পতায় কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটে শুধুমাত্র ১টি চালু রেখে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। টানা বৃষ্টির পর গত শনিবার ২টি ইউনিট এবং রোববার আরও একটিসহ মোট ৪টি ইউনিট চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ১ নম্বর ইউনিট, ২ নম্বর ইউনিট ও ৪ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট করে মোট ১২০ মেগাওয়াট এবং ৫ নম্বর ইউনিট থেকে ৩৫ মেগাওয়াটসহ সর্বমোট ১৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। হ্রদে পানি বেড়ে গেলে বাকি ৩ নম্বর ইউনিটও চালু করা সম্ভব হবে।

সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানির স্থর ছিল ৮৬ দশমিক ৬৭ ফুট মীনস সি লেভেল। রুলকার্ভ অনুযায়ী হ্রদে পানি থাকার কথা ৭৬.২৬ ফুট মীনস সি লেভেল। কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৮ ফুট মীনস সি লেভেল।