রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার নির্মাণ করা সড়কগুলোর বেহাল দশা, বেড়েছে ভোগান্তি

জুরাছড়ি রাঙামাটির দশ উপজেলার মধ্যে একটি। জুরাছড়ি একটি দুর্গম উপজেলা। রাঙ্গামাটি দুর্গম জুরাছড়ির সঙ্গে সদর ও ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে নেই সড়ক যোগাযোগ, জুরাছড়ি উপজেলার নির্মাণ করা সড়কগুলোর বেহাল দশা।

সড়ক নির্মাণে বিবেচনায় নেয়া হয়নি হ্রদের পানির উচ্চতা, বেড়েছে ভোগান্তি। রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার জেলা সদর এর সাথে নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ। এমনকি এই উপজেলার ইউনিয়নের সাথেও নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ। উপজেলা সদরে যৎসামান্য সড়ক রয়েছে তাও অপরিকল্পিত নির্মাণে বর্ষায় ডুবে যায় কাপ্তাই হ্রদের জলে। তাই প্রতিনিয়তই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানির নিচে ডুবে গেছে সড়ক, সেখান ঝুঁকি নিয়ে চলছে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল। সেই ডুবন্ত সড়ক মাড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা। কোথাও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সড়ক। ভাসমান অস্থায়ী বাঁশের সাকোই এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণের সময় এলজিইডি হ্রদের পানির উচ্চতাকে বিবেচনায় না নিয়ে সড়ক নির্মাণের কারণেই বর্ষা মৌসুম এলেই ডুবে যায়। অপরিকল্পিত উন্নয়নের ফলে একদিকে হয়েছে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয়, অন্য দিকে বেড়েছে দুর্ভোগ। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায় উপজেলাবাসী।

অটোরিকশা চলক মিন্টু চাকমা বলেন আমাদের জুরাছড়িতে এমনিতেই গাড়ি চলার মত রাস্তা নাই। যেটুকু আছে সেটারও অধিকাংশ ডুবে গেছে, ফলে ডুবন্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছি। এতে আমাদের আয় কমে গেছে।

শিক্ষার্থী সুস্মিতা চাকমা বলেন, আমাকে প্রতিদিন এই পানি পেড়িয়ে স্কুলে যেতে হয়। কোথাও কোথাও বাঁশের সাঁকো পাড় হতে হয়। তখন খুব ভয় লাগে।

জুরাছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমন চাকমা বলেন, রাঙ্গামাটিতে তো বর্ন্যা হয় না। এখানে সবাই জানে হ্রদের সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএল। কিন্তু ১০৮ এমএসএল এর বেশি পানি ধরে রাখা হয় না। সুতরাং কোনো পরিকল্পনা নিলে তো পানির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতাকে বিবেচনায় রেখেই নেয়া উচিত। কিন্তু আমাদের সড়কগুলো অপরিকল্পিত ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে ডুবে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চাই পরিল্পিতভাবে এই সড়কগুলো পুন:নির্মান করা হোক।

রাঙ্গামাটি এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ শফি বলেন, পূর্বে যে বা যারা সড়কটি নির্মাণ করেছেন, সে কাজটি অপরিকল্পতি ভাবে করা হয়েছে। এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। যেহেতু এই সড়ক নির্মানে নতুন করে কোনো বরাদ্দ পাওয়া যাবে না তাই সংস্কার কাজের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে সড়কের উচ্চতা বাড়ানো হচ্ছে। গেল অর্থ বছরে সড়কের কিছু উচ্চতা বাড়ানো হয়েছে। এবছরও করা হবে।

এলজিইডি’র তথ্যমতে, ৬০৬ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের জুরাছড়ি উপজেলায় যান চলাচলের মত সড়ক রয়েছে মাত্র ৬ কিলোমিটার।