রাঙ্গামাটিতে টানা বর্ষণে বেড়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা, জেলা প্রশাসনের মাইকিং

টানা ভারী বর্ষণের প্রভাব বেড়েছে পাহাড় ধসের আশঙ্কা। সারাদিনই থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সোমবার থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ বুধবার (৯ জুলাই) পর্যন্ত অব্যাহত আছে। পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে পাহাড়ের ঢালে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসরতদের নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে নিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর বেড়ে চলেছে। বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদনও। একইসঙ্গে বেড়েছে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী মানুষদের মধ্যে পাহাড়ধসের আশঙ্কা। পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে রাঙ্গামাটি পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে।

এদিকে পাহড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাঙ্গামাটি শহরের ৯টি ওয়ার্ডে মোট ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। কিন্তু পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের মধ্যে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ১০টা পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর দাঁড়িয়েছে ৯৫.৮৭ এমএসএল, যেখানে স্বাভাবিক স্তর থাকে ৮৫ এমএসএল। তবে কাপ্তাই হ্রদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৯ এমএসএল পর্যন্ত। এদিকে পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪টি ইউনিট থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়েছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান জানিয়েছেন, হ্রদের পানির পরিমাণ আরও বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৫টি ইউনিটে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ২২০ থেকে ২৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আসমা জানান, পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে এখনো কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি।

রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র অবজারভার ক্যা চি নু মারমা জানান, গতকাল সকাল ৬টা থেকে আজ সকাল ৬টা পর্যন্ত রাঙ্গামাটিতে ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যেহেতু বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ রয়েছে তাই এই বৃষ্টিপাত আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে, তবে ভারী বর্ষণের আশঙ্কা নেই বলে জানান তিনি।